ত্বকের এলার্জির চিকিৎসাঃ
শরীরে এমন অনেক সমস্যা আছে যা রোগ হিসাবে গন্য করা হয় না কিন্তু সেই সমস্যা গুলি রোগের থেকেও বেশি চিন্তিত করে তোলে। এখন যদি ত্বক সম্পর্কিত সমস্যার কথা বলা হয়, তাহলে ত্বকের এলার্জির কথা শুনতে সাধারণ মনে হলে্, কখনও কখনও এটি এমন সমস্যার সৃষ্টি করে যে মানুষের জ্বর পর্যন্ত হয়ে যায়।
ত্বক আপনার সৌন্দর্যর একটি আয়না। নিজেকে আকর্ষণীয় দেখার জন্য আপনি যেটা চেষ্টা করেন তা আপনার শরীরে কোথাও জমা হয়। প্রায় প্রত্যেকটি মানুষের চামড়ার এলার্জি রয়েছে কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটি প্রতিরোধ করার জন্য কোনো প্রতিকার গ্রহণ করেন না। সর্বাধিক বিষয় হল যে অনেকেই জানেন না যে সঠিক চিকিত্সার অভাবের কারণে, তাদের ত্বক খুব খারাপ হতে পারে এবং ক্ষতির শিকার হতে পারে। সুতরাং চর্ম এলার্জি, উপসর্গ এবং তাদের প্রতিরোধ করার উপায়গুলি সম্পর্কে জানা যাক।
কিভাবে এলার্জির প্রতিক্রিয়া হয়-
বহু মানুষ ত্বক এলার্জি দ্বারা আক্রন্ত হয়, যার জন্য তাদের চুলকানির বদলে দাদ, ছোল, ফুসকুড়ি ইত্যাদি হয় এবং এগুলিকে সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় না, কিন্তু এর পরিনাম গভীর হতে পারে। যদি ঠিক সময় এগুলির ওপর গুরুত্ব না দেওয়া হয় তাহলে নানান ত্বকের রোগ দেখা দিতে পারে। এগুলি ছাড়াও বহুবার প্লাস্টিকের ব্যাগের কোন দ্রব্য, পারফিউম, চশমা, সাবান ইত্যাদি থেকে এলার্জি হতে পারে। এলার্জি এই ধরনের কনটেক্ত ডার্মাইটিস বলা হয়। সুতরাং জানা যাক এর লক্ষণ, কারণ এবং এগুলি নির্মূল করার ঘরোয়া উপায়।
এলার্জি হওয়ার কিছু নির্দিষ্ট কারণ
- আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে নাকে এলার্জি হতে পারে
- বায়ু দূষণ
- চামড়া ওপর ট্যাটুরপ্রভাব
- শরীরের অনুপযুক্ত খাবার খাওয়া
- পরিচ্ছন্নতা
- সৌন্দর্যতার চুলের রং ব্যবহার করা
- কোন ড্রাগ বা ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
- শুষ্ক ত্বকের কারণে ত্বক এলার্জি
- পোকামাকড় কামড়ালে
এলার্জির লক্ষণ
- ত্বক রঙ পরিবর্তন হওয়া, যেমন লাল দাগ হওয়া
- চুলকানি হওয়া
- ব্রণর মত ফুসকুড়ি হওয়া
- পতন বা ফাটল।
- জ্বালা জ্বালা করা
- ব্রণে পরিণত হত্তয়া
এলার্জি এড়ানোর জন্য কিছু নিয়মাবলী
- বাড়ির বাইরে বেরোনোর সময় মুখ এবং শরীরের অন্যান্য অংশ কাপড় ঢেকে দিন। সানস্ক্রীন ব্যবহার করুন।
- মুখে জল দিয়ে মুখ ধুন এতে মুখের ধুলো, নোংরা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
- অ্যালো ভেরা জেল বা অ্যালো থেকে তৈরি ক্রিম ব্যবহার করুন।
- কাজের পর সন্ধ্যায় স্নান করুন এতে আপনার শরীরে ধুলো-নোংরা ইত্যাদি দূর হয়ে যাবে এবং এতে এলার্জি হবে না।
- শুধুমাত্র ফিল্টার জল ব্যবহার করুন।
এলার্জি প্রতিকার করার জন্য কয়েকটি ঘরোয়া উপায়-
- কর্পূর এবং নারকেল তেল -যদি আপনার ত্বকে এলার্জি থাকে এবং সেই জায়গায় যদি চুলকানি হয় তাহলে সেখানে কাপুর এবং নারকেল তেল ব্যাবহার করতে পারেন। কাপুর এবং নারকেল তেল একসঙ্গে মিশিয়ে এলার্জির জায়গায় দিন তাহলে আপনি দ্রুত আরাম পাবেন।
- ফটকিরি- ফটকিরির জল দিয়ে এলার্জির হওয়া জায়গা ধুয়ে পরিষ্কার করুন । কর্পূর এবং সরিষা তেল সেই জায়গায় লাগাতে থাকুন।আমলকীর বীজ পুড়িয়ে রাখুন এবং তাতে একটু কাপুর এবং নারকেল তেল মিশিয়ে নিয়ে লাগান। এর ফলে আপনি অনেক আরাম পাবেন।
- অ্যালো ভেরা - অ্যালো ভেরা হ'ল জীবাণু প্রতিরোধে সক্ষম এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল যা ত্বক জ্বালা কমানোর ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী। অ্যালো ভেরা গাছের পাতাকে বেটে তার রস বার করে নিন এবং সেই রস এলার্জি হওয়া জায়গায় প্রয়োগ করুন।
- নিম – নিম হল বহু উপকারী বিশিষ্ট একটি ঔষধ। যা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ দ্বারা সৃষ্ট এলার্জি নিষ্কাশন করতে ব্যবহৃত করা হয়। নিমের কিছু পাতা রাতে জলে ভিজিয়ে রাখুন এবং পরদিন সকালে সেগুলি বেটে একটি পেস্ট তৈরি করে নিন এবং চুলকানি হওয়া জায়গায় তা ব্যবহার করুন।
- আদর্শ পানীয় - তাজা আদা, মৌরি এবং পুদিনা পাতা গরম জলে ফুটিয়ে নিয়ে তা পান করুন। এটি আপনি প্রতিদিন 2-3 বার পান করতে পারেন। এই ত্বকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
আপনি এলার্জি থাকলে, এই সতর্কতা গ্রহণ করুন
- ত্বকে চুলকবেন না।
- আপনি নিয়মিত যেসাবানব্যবহার করেন তার ব্যবহার করে বন্ধ করুন।
- শরীরে খোলা বাতাস লাগান।
- সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, যদি আপনি জানেন যে আপনারকীসে অ্যালার্জি, তবে তা থেকে দূরে থাকুন।