পিসিওডি - কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা
আপনি কী হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে যাওয়ার কারণে পিরিয়ডস ঘটিত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন? এই সমস্যাটি পিসিওডি এবং পিসিওএস অথবা পলিসিসটিক ওভারি সিন্ড্রোম নামে পরিচিত, যা আপনার প্রেগনেন্ট হওয়াতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এবং আপনার চেহারায় অবাঞ্ছিত পরিবর্তন আনে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পিসিওডি যুক্ত মহিলাদের ডিম্বাশয় এ ছোট সিস্ট এর জন্ম হয়। এই সিস্ট গুলি ক্ষতিকারক নাও হতে পারে অথবা ক্যানসার নাও সৃষ্টি করতে পারে কিন্তু তারা হরমোন গত ভারসাম্য বিনষ্ট করতে পারে আপনার শরীরে।
কারণ
পিসিওডি ফের কোন সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো সঠিকভাবে জানা যায়নি। পিসিওএস রোগীদের ডিম্বাশয় অতিরিক্ত পরিমাণে এন্ড্রোজেন অথবা পুরুষ সেক্স হরমোন প্রস্তুত করে যেগুলি ডিম্বানু সৃষ্টিতে ভারসাম্য বিনষ্ট করে, ব্রণ সৃষ্টি হয় এবং সমগ্র শরীরে অতিরিক্ত চুল সৃষ্টি করে। আপনার শরীরে ইনসুলিন ব্যবহারের সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং আপনার শরীর একটি ইনসুলিন রোধক সৃষ্টি করতে পারে। জেনেটিক্স কে মহিলাদের পিসিওডি -র কারণের মুখ্য ফ্যাক্টর হিসেবে বিচার করা হয়।
লক্ষণ
পিসিওডি লক্ষণ গুলি প্রথমে খুবই শান্ত অবস্থায় থাকে। খুবই সাধারণ লক্ষণ গুলি হল:
- ওজন এবং ওজন হ্রাসে বিপত্তি।
- ব্রণ বেরিয়ে আসা।
- সমগ্র শরীরে অতিরিক্ত চুল সৃষ্টি হওয়া যেগুলি কোন মহিলা সুলভ বৈশিষ্ট্য নয়। মুখে ঘন এবং কালো চুল এবং কিছু মহিলাদের ক্ষেত্রে পেটে ,বুকে এবং পিঠে অস্বাভাবিক ভাবে অতিরিক্ত চুল সৃষ্টি হয়।
- মাথায় চুল পাতলা হয়ে আসা।
- অনিয়মিত মাসিক চক্র দেখা যায়। সাধারনত পিসিওডি যুক্ত মহিলারা বছরে নয় বারের থেকে কম পিরিয়ডস অনুভব করে। কিছু মহিলাদের ক্ষেত্রে কোন পিরিয়ডস নাও দেখা যেতে পারে, অন্যদিকে অন্যদের ক্ষেত্রে ভারী এবং অস্বাভাবিক রক্তপাত সহ্য করতে হতে পারে।
- পিসিওডি যুক্ত মহিলাদের ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্ব দেখতে পাওয়া যায়।
- বিষন্নতা
চিকিৎসা
পি সি ও ডি এর চিকিৎসার মূল লক্ষ্য হলো এই রোগ গঠিত লক্ষণগুলি প্রতিকার করা এবং এই রোগে সুদূরপ্রসারী স্বাস্থ্যগত সমস্যা গুলি প্রতিহত করা। নিম্নলিখিত পদ্ধতি গুলি ব্যবহার করে পিসিওডি এর চিকিৎসা এবং নিয়ন্ত্রিত করা যেতে পারে:
- আপনাকে সব সময় ফিট থাকতে হবে এবং নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। হাঁটা একটি আদর্শ ব্যায়াম যেটা আপনি করতে পারেন।
- আপনার স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা উচিত যেগুলি এর মধ্যে সবজি,বাদাম,ফল, আস্ত শস্যদানা এবং বিন অন্তর্গত। সেই সমস্ত খাবার কুলি পরিহার করুন যেগুলি সম্পৃক্ত ফ্যাট দিয়ে তৈরি এবং সেই খাবার গুলির মধ্যে ভাজা খাবার মাংস এবং চিজ অন্তর্গত।
- ওজন কমানো আপনার স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী যদি আপনার পিসিওডি থাকে। এমনকি একটু কম মাত্রায় ওজন কমানো আপনার হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করতে এবং মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে।
- ধূমপান পরিহার করুন কারণ ধূমপান আপনার শরীরে এন্ড্রোজেনের মাত্রা বাড়ায়।
- জন্মনিয়ন্ত্রণ ওষুধ এর সেবন করতে পারে কারণ এগুলি আপনার লক্ষণ গুলি কে কমায় এবং ফার্টিলিটি ওষুধগুলি গ্রহণ করতে পারেন যদি আপনার পিসিওডি এর কারণে বন্ধ্যাত্ব ঘটিত সমস্যা হয়।
আপনি একজন গাইনোকোলজিস্টের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন যদি আপনি পিসিওডি এর কোনো লক্ষণ এর সম্মুখীন হন। ইহা আপনার অসুস্থতা তাড়াতাড়ি ধরতে এবং পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আগেই তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু করতে সাহায্য করবে।