পায়ের ব্যথার চিকিৎসা
আজকালের ব্যস্ত জীবনে কার কখন কি শারীরিক সমস্যা দেখা যায় তার কোনও ভরসা নেই। বয়স্ক, শিশু, যুবক সবাই কিছু না কিছু ব্যথার সাথে লড়াই করছে। আর এই সমস্যাগুলির মধ্যে হল পায়ের ব্যথা। এমনিতে তো পায়ের ব্যথা হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা কিন্তু এটা হলে শরীরের সাথে মাথাও অস্থির থাকে, আর বয়সের সাথে সাথে এই সমস্যা বাড়তেই থাকে। এটা দরকারি না যে দুটো পায়েই ব্যাথা হক। এরকমও হতে পারে যে একই পায়ে বা পায়ের কোনও এক অংশে ব্যথা হচ্ছে। অনেক সময় তো পায়ের ব্যথা হয়ে হয়ে যায় কিন্তু অনেক বার এটা এত তীব্র হয় যে সহ্যকরা মুশকিল হয়ে যায়। এইরকম সময় কোন কাজ করা চ্যালেঞ্জ হয়ে যায়। এছাড়াও অনেকসময় পায়ে দুর্বলতা আসে আবার অনেকসময় অবস হয়ে যায়।
পায়ের ব্যথার অনেক কারণ হতে পারে। যেমন-
- খিঁচুনি
- মাংসপেশিতে ব্রণ
- মাংসপেশির একের ওপরে আরেকের উঠে যাওয়া
- পুষ্টির কমতি
- শরীরে জলের কম হওয়া
- অনেকক্ষণ ধরে একি অবস্থানে থাকা
- আগের পয়ের ব্যথার কারন।
পায়ের ব্যথার চিকিৎসার জন্য অনেক পেইনকিলার এবং জেল আছে, কিন্তু অনেক সময়ই যন্ত্রণা ত্রাণের ওষুধ খেলে অনেক ধরণের ক্ষতিকারক পরিনাম দেখা দেয়।, আর মানুষের শরীরে অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায় এবং আরো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আরে তার সাথে এই সব উপায় খরচও বাড়ায়, এইজন্য পায়ের ব্যাথা থকে আরাম পেতে ডাক্তার এবং ওষুধের সাহায্য না নিয়ে নিজেরও কিছু চেষ্টা করা উচিৎ। তাই কিছু ঘরোয়া টোটকা এবং কিছু নিয়ম পালন করুন। আসলে অনেক সময় মনে হয় যে আমরা আমাদের পায়ের দেখাশোনা নিজেরাই করতে পারি, আবার অনেক সময় আমরা খুবই ক্লান্ত থাকি আর আমাদের সাহায্য করার মতোও কেউ থাকে না। এখন আর চিন্তা করতে হবে না আমাদের বলেদেওয়া টোটকার সাথে নিজের পায়ের ব্যাথার চিকিৎসা নিজেই করুন।
পায়ের ব্যাথার থেকে বাঁচার উপায়
- নুন
পায়ের ব্যাথার জন্য নুন অনেক আরাম দেবে। তাই শুকনো নুন শুকনো শুতির কাপড়ে বেঁধে পোটলা বানান। এই পোটলি টাকে তাভায় গরম করে ব্যথার জায়গায় সেঁক করুন, পোটলাটাকে ততটাই গরম করবেন যতটা আপনি সজ্য করতে পারবেন।
-
নোনা জল
খনিজ লবণে ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়। খনিজ লবণ খান এবং এই লবণ জলে মিশিয়ে পা ধুয়ে নিন। এটা নার্ভের সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করে মাংসপেশিকে প্রাকৃতিক ভাবে আরাম দেওয়ার কাজ করে। এর সাথে ফোলা কমানোয় ও সাহায্যকারী এটা।
-
বরফের দণ্ড
যদি খুব দৌড়ঝাঁপ করে আপনার পায়ে ব্যাথা হয় তাহলে ঠাণ্ডা পট্টি ব্যাবহার করলে আরাম পাবেন। এইরকম করলে ব্যাথা তো কমবেই সাথে যদি ফোলা বা শিহরণ থাকলে সেটায়ও উপকার পাবেন। এর জন্য আপনি একটি পাতলা কাপড়ে বরফের টুকরো নিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ধরে সেঁক করুন। দিনে দুই থেকে তিনবার এইরকম করুন তাতে তারাতারি লাভ পাবেন।
-
গরম জল
গরম জল পায়ের ব্যাথার জন্য একটা অসাধারণ টোটকা বলে গণ্য হয়। একটা পাত্রে অল্প ঠান্ডা জল নিন এবং তাতে ১৫ মিনিট ধরে আপনার পা চুবিয়ে রাখুন। এই প্রক্রিয়া পুরো হয়ে গেলে একটা বাসুনে গরম জল ভরুন, জলটি ততটাই গরম করবেন যতটায় আপনার পায়ে আরামলাগবে। এখন এই গরম জলের পাত্রে ১৫ মিনিট ধরে আপনার পা চুবিয়ে রাখবেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনার আরাম লাগতে লাগবে।
-
ম্যাসাজ
যদি আপনার মাংসপেশিতে কোনরকমের অসুবিধা থাকে আর সেটাই ব্যাথার কারন হয় তাহলে নারকোল তেল, অলিভ ওয়েল দিয়ে ম্যাসাজ করলে উপকার পাবেন। দিনে দুই থেকে তিনবার ম্যাসাজ করলে আপনার ব্যাথা থেকে তারাতারি আরাম মিলবে।
-
হলুদ
যেকোনো ব্যাথায় হলুদের ব্যবহার সেই ব্যথার ওষুধ হিসেবে কাজ করে। আর পায়ের ব্যথার থেকে রেহাই পেতেও হলুদের ব্যাবহার উপকারী হয়। হলুদে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ পাওয়া যায়। হলুদে পাওয়া যাওয়া কারকিউমিন যৌগিক ব্যথার উপশমে খুব উপকারী।
-
আদা
বেশি করে আদা ব্যবহার করুন। আদাতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ পাওয়া যায়। এটা ফোলা এবং ব্যথা কম করার কাজ করে। এটা রক্ত সঞ্চালনকে বাড়ায়, যার জন্য মাংসপেশিতে আরাম লাগে।
-
ব্যায়াম
পায়ের ব্যথা বা যেকোনো ব্যথায় লম্বা আরামের জন্য আপনি দিনে ব্যামের জন্য সময় বার করুন। অনেক সময় শুধু ব্যায়ামই আপনাকে অনেক শারীরিক সমস্যার থেকে মুক্ত হবেন। খেয়াল রাখবেন যে অনেকসময় অনেক ব্যাথা কিছু ঘণ্টার জন্য থাকে তারপর ঠিক হয়ে যায় কিন্তু ব্যথা যদি বাড়তেই থাকে এবং ঘরোয়া টোটকা দিয়েও আরাম না পাওয়া যায় তাহলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। কারন তখন এই ব্যাথা কোন জটিল রোগের লক্ষণ হতে পারে।