প্রেগনেন্সির সময় পেটে ব্যথা
গর্ভাবস্থায় মহিলাদের শরীরে অনেক পরিবর্তন হয়। কিছু পরিবর্তন খুবই কষ্টদায়ক।এই পরিবর্তন চলাকালীন ১৮ থেকে ২৪ সপ্তাহের মাথায় ইউটেরাসের হাড়ের প্রসারনের ফলে তলপেটে খুব যন্ত্রণা হয়।এই হাড়গুলোর মূলতঃ দুটি আস্তরণ থাকে যা ইউটেরাসটিকে স্থিত থাকতে সাহায্য করে।এটি ইউটেরাস ও ভ্রূণের বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করে।এক্ষেত্রে সাধারণতঃ পেটের একদিকে ব্যথা করে, আবার অনেকসময় দুই দিকেই ব্যথা করে।এরকম গতিবিধির কারণে অনেককিছুই হতে পা্রে।যেমন হঠাৎ করে কাশি পাওয়া,হাঁচি পাওয়া,হাসতে ইচ্ছে করা বা হঠাৎ দাঁড়াতে ইচ্ছে করা। প্রথমবার যখন ব্যথা শুরু হয় তখন একটু অসুবিধা হয় কিন্তু এটা খুবই সাধারণ একটি ব্যপার ।এই বিষয়ে চিন্তার কোন কারণ নেই।যদি ব্যথাটি কয়েক সেকেন্ডের বেশী থাকে তাহলে ডাক্তার দেখান।
বাঁদিকের তলপেটে ব্যথা:
গর্ভাবস্থায় ইউটেরাসের হাড়গুলো প্রসারণের ফলে মূলতঃ পেটে ব্যথা হয়ে থাকে। ভ্রূণ যত বৃদ্ধি পেতে থাকে তত ইউটেরাসের আভ্যন্তরীণ পর্দায় চাপ সৃষ্টি হয়।দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের সময় থেকে পেটের দুইপাশে ব্যথা হয়।যদি আপনার বামদিকে কিছুটা ব্যথা হয় তাহলে বুঝতে হবে যে ইউটেরাসের ডানদিকে কোনো পরিবর্তন ঘটছে।কখনও কখনও ডানদিকের হাড় শিথিল করার জন্য বাঁদিকে হাড়গুলির মধ্যে একটি টান অনুভূত হয়।এই ব্যথা কমানোর জন্য ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।এটা থেকে মুক্তি পেতে পেলভিকের কিছু ব্যায়াম করতে পারেন। অনেক সময় পেটেও এই ব্যথা থেকে যায়। উদাহরণস্বরূপ যদি ভ্রূণটি বাঁদিকের ডিম্বাশয়ে থাকে, তাকে ইকটপিক প্রেগনেন্সি বলে।এর কারণেও অনেকসময় বাঁদিকে ব্যথা হয়।আবার অনেক মহিলাদের গর্ভাবস্থার প্রথম সপ্তাহে কোনো লক্ষণ প্রকাশিত হয় না। ইরেকটপিক প্রেগনেন্সিতে ভ্রূণ ইউটেরাসে না বেড়ে অনেকসময় ফ্যালোপিয়ান টিউবের ভিতর বেড়ে ওঠে,যা মা ও সন্তানের পক্ষে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।প্রেগনেন্সির প্রথম দিকেই যদি আলটাসোনোগ্রাফিতে ধরা পরে তবে অপারেশন করে ঠিক করা যাবে।এছাড়া যদি সিরিয়াস কিছু হয় তবে বামপাশে পেট ব্যথা,অকালপ্রসব,স্মৃতিশক্তি হারানো,কিডনীতে পাথর এবং কিছু সংক্রমণ হয়ে থাকে। এই পেটের বামদিকের ব্যথা নিয়ে যদি ভুগে থাকেন তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।তবে গর্ভাবস্থায় অল্প ব্যথা থাকা ভালো কারণ তাতে বোঝা যাবে যে সাধারণ বৃদ্ধি ঘটছে।কিন্তু ব্যথার সাথে সাথে জ্বর, রক্তপাত এবং অন্যান্য লক্ষণ অনুভূত হলে শীঘ্রই ডাক্তার দেখান।
এপিগ্যাসট্রিক ব্যাথা:
গর্ভাবস্থায় ব্যথা মানেই সেটা কোনো গুরুত্বপূর্ণ অসুখের কারণে ঘটেছে তা নয়,কিছুক্ষত্রে সাধারণ প্রেগনেন্সির লক্ষণও হতে পারে।যদিও ইউটেরাসের হাড়ের প্রসারতার কারণে ব্যথা হয় তবুও অনেকক্ষেত্রে গ্যাস, ডায়েরিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি কারণে ব্যথা হয়ে থাকে।আসলে গর্ভবতী মহিলাদের নিজেদের সমস্যা নিজেদেরই মেটানো উচিৎ।এবং একইসঙ্গে , ডাক্তারদের নিয়মিত চেকআপ এ থাকা উচিত।
গর্ভাবস্থায় উপরের পেটে ব্যথা সবসময় পেটেফোলা থেকে হয় না। কখনও কখনও এই নিম্নলিখিত গুরুতর রোগের লক্ষণও হতে পারে। প্রতিটি গর্ভধারণের সময়, এই রোগগুলির প্রতিটি গুরুতর এবং যদি তাদেরচিকিৎসা না করা হয়, তবে ফলাফল মারাত্মক হতে পারে। প্রাক-একচেম্পিয়া - রক্তচাপ এতে মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পায়।