ডিম্বস্ফোটন কি
খুব অল্প সংখ্যক মানুষের মধ্যে তাদের শরীরে হওয়ায় নানান ধরণের পরিবর্তন সম্পর্কে জ্ঞান থাকে। বয়সের সাথে শরীরে ঘটা পরিবর্তন গুলি সম্পর্কে যদি জ্ঞান থাকে তাহলে চাহিদা মত তা পূরণ করা সম্ভব হয়। শরীরের যা দরকার তা দেওয়া যায়। ধরা যাক, যখন আপনি গর্ভবতী হতে চান। যদিও এই ধরনের সমস্যাগুলির দীর্ঘ তালিকা রয়েছে, আজকে আমরা এই রকম একটি শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আলোচনা করব যা কোনও মহিলার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যাকে আমরা ডিম্বস্ফোটন নামে জেনে থাকি। অনেক মানুষের মতে গর্ভধারন করা একটা খুব সহজ প্রক্রিয়া, যেটা যে কোন সময় শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করলেই হয় কিন্তু বাস্তব এর থেকে অনেক আলাদা। গর্ভাবস্থা শরীরের দীর্ঘ কর্মের ফলাফল। এবং এর শুরু হয় শারীরিক সম্পর্কের পর ডিম্বস্ফোটন পর্যন্ত। সুতরাং জানা যাক ডিম্বস্ফোটন কি ভাবে হয় এবং এর সুবিধা কি।
ডিম্বস্ফোটন-
ডিম্বস্ফোটন মাসের সেই সময় হয়(১২ থেকে ২৪ ঘন্টা)যখন ডিম বীর্যর সাথে মিলিত হবার জন্য প্রস্তুত হয়। এখানে ডিম গুলি ঋতুস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বাইরে বেরিয়ে যায়। এই ঋতুস্রাবকে লক্ষ্য রাখলেই আপনি বুঝতে পারবেন যে ডিম্বস্ফোটন কখন হয়। প্রত্যেক মাসে একজন মহিলার অণ্ডকোষ থেকে ১৫ থেকে ২০ টা ডিম নিঃসৃত হয়। এই ডিম গুলি ফ্যালোপিয়ান টিউবগুলির মাধ্যমে গর্তে পৌঁছায়।
আপনাকে নিজের সার্ভিক্যাল মানে বুঝতে হবে
নিজের ডিম্বস্ফোটনকে বোঝার এটাও একটা ভাল উপায়। ঋতুস্রাবের শুরুর প্রথম দিকে গ্রীবা অর্থাৎ যোনি এবং গর্ভাশয়ের মধ্যবর্তী রাস্তা একটু শক্ত, কম এবং বন্ধ হয় যায়। ডিম্বস্ফোটন শুরু হবার পরই এগুলো খুলে যায় এবং জায়গাটা নরম হয়ে যায় যাতে শুক্রাণু গুলি ভিতরে যেতে পারে। আপনি যদি নিয়মিত গ্রীবার দিকে খেয়াল রাখেন তাহলে আপনি নিজেই এই ব্যাপারে বুঝতে পারবেন।ঋতুস্রাব শেষ হওয়ার পরই আবার জায়গাটি শক্ত হয়ে যায়।
কিন্তু যে সব মহিলার নিয়মিত ঋতুস্রাব হয় না তাদের ক্ষেত্রে ডিম্বস্ফোটনের সময় আলাদা হয়। কখনও কখনও ডিম গুলি একটার পর একটা পূর্ণ অবস্থায় পরিণত হয় এবং হরমোন বৃদ্ধির সাথে সাথে তা পূর্ণাঙ্গভাবে বেরোয়। পরিপক্ত ডিমগুলি ফ্যালোপিয়ান টিউবগুলিতে পড়ে এবং টিউবটিতে চলে যায় এবং শুক্রাণুর জন্য অপেক্ষা করে।
ডিম্বস্ফোটন হওয়ার সম্পর্কে আপনি যদি জেনে জান তাহলে গর্ভধারনের ক্ষেত্রে এর অনেক সুবিধা আছে। ডিম্বস্ফোটনের সময় শারীরিক মিলন অর্থাৎ সেক্স যদি না করা হয় তাহলে সহজেই গর্ভধারন থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আসুন আজকে আমরা আপনাকে বলব কি ভাবে ডিম্বস্ফোটন সম্পর্কে জানতে পারবেন।
ডিম্বস্ফোটনের লক্ষণ
- যে সব মহিলাদের নিয়মিত ঋতুস্রাব হয় তারা খুব সহজেই ডিম্বস্ফোটনের পদ্ধতি অনুভব করতে পারবে। কারণ তাদের মধ্যে ডিম্বস্ফোটনের সময় নিশ্চিত থাকে।
- যদি আপনার মাসিক চক্র পুরোপুরি ২৮ দিনে সম্পূর্ণ হয় তাহলে ১২ থেকে ১৬ দিনের মধ্যে আপনি ডিম্বস্ফোটন প্রক্রিয়া উপলব্ধি করতে পারবেন। সেই দিনই ডিম্বস্ফোটন প্রক্রিয়া শুরু হবার বেশি সম্ভাবনা থাকে।
- যে সব মহিলাদের ঋতুস্রাব নিয়মিত হয় না তাদের মধ্যে ডিম্বস্ফোটনের সময় নিশ্চিত থাকে না। মাসিক চক্রের পরিবর্তনের সাথে সাথে ডিম্বস্ফোটনের সময়ও পরিবর্তন হয়ে যায়।
- ডিম্বস্ফোটন সম্পর্কে জানতে গেলে ১২ থেকে ১৬ দিনের মধ্যে সংকেতকে বুঝতে হবে। আপনার শরীর কোন সংকেত দিলে বুঝতে হবে আপনি ফার্টাইল দশাতে আছেন।
সার্ভিকাল মিউকাস
ডিম্বস্ফোটনের সময় সার্ভিকাল মিউকাসের মতো একটি পরিবর্তন দেখা যায়। যোনি স্রোতের পরিমাণ গাঢ় হয় এবং এর মধ্যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে পার্থক্য দেখা যায়। যোনি স্রোত অন্য দিনের চটচটে হয় কিন্তু ডিম্বস্ফোটনের সময়, এটি খুব চকচকে দেখতে লাগে এবং স্পর্শ করলে এটি নমনীয় বলে মনে হয়।
তাপমাত্রা
শরীরের তাপমাত্রা অন্যান্য দিনের তুলনায় বৃদ্ধি পায়। ঘুম থেকে উঠে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করুন, যদি তাপমাত্রা বেশি হয় তাহলে এটা ডিম্বস্ফোটনের শুরুর সংকেত তা বুঝতে হবে। এর জন্য থার্মোমিটারের সাহায্যে অন্যান্য দিনের তাপমাত্রা নিন। এর অবস্থায় যদি আপনার শরীরের তাপমাত্রা অন্যদিনের তুলনায় বেশি হয় তাহলে বুঝতে হবে ডিম্বস্ফোটন শুরু হয়ে গেছে।
কামের ইচ্ছা
ডিম্বস্ফোটনের সময় সেক্স করার ইচ্ছা বেশি হয়। এই সময় ফার্টাইল ফেজ থাকে তাই শারীরিক সংযোগ করার প্রবনতা বেশি দেখা যায়।