Lybrate Logo
Get the App
For Doctors
Login/Sign-up
Last Updated: Apr 02, 2024
BookMark
Report

স্বপ্নদোষ রোগের সম্বন্ধে জানুন

Profile Image
Dr. Sanjeev Kumar SinghAyurvedic Doctor • 15 Years Exp.BAMS
Topic Image

অনেক চেনা জানা রোগের মধ্যে পুরুষদের রাত্রে ধাতু নির্গমন হওয়া বা যাকে বলা হয় স্বপ্নদোষ, খুবই সাধারণ একটি রোগ। স্বপ্নদোষ হ’ল রাত্রে ঘুমের মধ্যে বীর্যপাত হওয়া। বয়ঃসন্ধিকালে স্বপ্নদোষ হওয়া খুবই সাধারণ একটি ঘটনা; ঘুমিয়ে পড়ার পরে নিজে নিজেই বীর্যপাত ঘটে যাওয়াকেই স্বপ্নদোষ বলে। এটিকে সেভাবে রোগ নাও বলা যেতে পারে, এটি আসলে একটি অতি সাধারণ একটি ব্যাপার। বয়ঃসন্ধিকালের শুরু থেকে যৌবনের শুরু অবধি অনেক যুবকই এটির শিকার হন এবং তার অনেক কারণ থাকতে পারে। যেসব যুবকদের স্বপ্নদোষ হয় তাদের যৌন রুচি, অশ্লীল আচার, অশ্লীল ছবি দেখা, অশ্লীল বই পড়া এবং অশ্লীল চলচ্চিত্র দেখার কারণে রাত্রে বা দিনে ঘুমানোর সময়ে ধাতু নির্গমন হয়ে যেতে পারে। যৌন রোগ বিশেষজ্ঞদের মতে স্বপ্নদোষের অনেক কারণ হতে পারে যেমন হস্তমৈথুন, মানসিক মৈথুন, অ-প্রাকৃতিক মৈথুন ও উষ্ণ খাবার খাওয়া, অশ্লীল পরিবেশ ও অস্বাভাবিক হারে মাদক সেবন করলেও স্বপ্নদোষ হতে পারে। এছাড়াও, অনেক যুবকদের মধ্যে কম বয়সে তাদের থেকে বেশি বয়সের মহিলাদের নিয়ে অনেক কাম বাসনা থাকে এবং সেই কাম বাসনা পূরণ না হ’লেই তাদের স্বপ্নদোষ হয়। মাসে যদি স্বপ্নদোষ একবার বা দু’বার হয়, তবে তা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। সাধারণত বিয়ের পরই স্বপ্নদোষের রোগ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু যদি তা চলতে থাকে তবে তার চিকিৎসা করা দরকার হয়ে পড়ে। যদি মাসে দু’বারের চেয়ে বেশি স্বপ্নদোষ হয় তবে তার কারণ কি হতে পারে জেনে নিন।

স্বপ্নদোষের কারণ –

১। অশ্লীল চলচ্চিত্র – স্বপ্নদোষের প্রধান কারণ হ’ল অশ্লীল চিন্তন, অশ্লীল চলচ্চিত্র দেখা ও মেয়েদের নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা। মনের মধ্যে কামের উত্তেজনাপূর্ণ চিন্তা করা অথবা কামের বাসনা করাই এই রোগের সবচেয়ে প্রথম কারণ। যদিও অনেক সময়ে শুধু যৌনকর্মের কথা ভাবলেই স্বপ্নদোষ হতে পারে।

২। সঙ্গিনীর থেকে দূরে থাকা – কখনও কখনও সঙ্গিনীর থেকে অনেক দিনের জন্য অনেক দূরে থাকাটাও স্বপ্নদোষের একটা কারণ হতে পারে। প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে প্রবল আকর্ষণের কারণেও স্বপ্নদোষ হতে পারে। স্বপ্নদোষের আরও একটা কারণ হতে পারে অনেক দেরি করে বিয়ে করা।

৩। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও কোষ্ঠকাঠিন্য – পেটের সমস্যা বা কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে অথবা স্নায়ুতন্ত্রের দুর্বলতার কারণেও স্বপ্নদোষ হতে পারে। এছাড়াও, খাবারে বেশি ঝাল মশলার প্রয়োগ করা, সুস্বাদু অথচ অত্যন্ত গুরুপাক খাদ্য সেবন করা ও আয়েশ, বিলাস করে জীবনযাপন করাও কিন্তু এই রোগের একটা কারণ হতে পারে। রাত্রে শুতে যাওয়ার আগে অনেক বেশি খাদ্য সেবনের ফলেও এটা হতে পারে।

৪। দুগ্ধজাত দ্রব্যের অধিক সেবন – অধিক মাত্রায় ঘি বা দুধ অথবা দুগ্ধজাত মণ্ডা বা মিঠাই সেবন করলে কিম্বা রাত্রে শোয়ার আগে খুব বেশি গরম দুধ খাওয়ার ফলে স্বপ্নদোষ হতে পারে। রাত্রে খাবার খাওয়ার পরেই ঘুমিয়ে পড়ার কারণেও ঘুমন্ত অবস্থায় ধাতু নির্গমন হতে পারে।

৫। মানসিক চাপ – কখনও হঠাৎ খুব ভয় পেলে আমাদের শরীর শিথিল হয়ে যায়। এর ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের অপর মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কমে যায়। স্বপ্নদোষের এইটাও একটা বড় কারণ হতে পারে।

স্বপ্নদোষ নিয়ে যা যা সাবধানতা অবলম্বন করবেন –

স্বপ্নদোষের চিকিৎসার জন্যে ওষুধ খাওয়ার আগে নিজস্ব আচার ও চিন্তা ভাবনা শুদ্ধ করা দরকার। নিজেকে নিজের শরীরের আধিকারিক বানানো বেশি জরুরি। স্বপ্নদোষের রোগীর জন্য একা থাকাটা একটা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে কারণ একা থাকলে অশ্লীল চিন্তা ভাবনা করার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যেমন আগে বলা হ’ল, স্বপ্নদোষের কারণ পেটের সমস্যাও হতে পারে। সুতরাং স্বপ্নদোষের সমস্যা মেটাতে গেলে এইদিকগুলো খেয়াল রাখতে হবে।

  • এটি সম্পূর্ণ মানসিক একটি রোগ। নিজের মনকে পরিষ্কার রাখুন।
  • ঠাণ্ডা জলে স্নান করুন।
  • রাত্রে গরম দুধ খাবেন না।
  • ঘুমানোর আগে পায়ের তালু থেকে হাঁটু পর্যন্ত ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে নিন।
  • সেইসব বই পড়বেন না যা আপনার মনে উত্তেজনার সৃষ্টি করতে পারে।
  • সপ্তাহে একদিন হস্তমৈথুন করুন।
  • রাত্রে শোয়ার প্রায় ৩ ঘণ্টা আগে খাবার ও পানীয় খেয়ে নিন।
  • শোয়ার সময় সোজা হয়ে শোয়ার চেষ্টা করুন।
  • শোয়ার আগে ভাল কোনও বই পড়তে পারেন যাতে আপনার মনে ভাল চিন্তা আসে।
  • নিয়মিত ত্রিবন্ধ প্রাণায়ানাম, যোগাসন, ব্রাহ্মমুহূর্তে ওঠার ফলে লাভ পেতে পারেন।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য হলে তাড়াতাড়ি তার প্রতিকার করুন।
  • লিঙ্গের চারপাশে গুপ্ত লোম বেশি বাড়তে দেবেন না।
  • শুতে যাওয়ার আগে প্রস্রাব করতে হবে।
  • গুপ্তাঙ্গের ওপরের চামড়া নিয়মিত ছাড়িয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
  • শোয়ার সময় অন্তর্বাস খুলে শুতে হবে। হালকা ও ঢলঢলে সুতির জামা প্যান্ট পরে শোবেন। পা এবং হাত ভাল করে ধুয়ে সোজা হয়ে শুতে হবে। এর ফলে স্বপ্নদোষ হবে না।

স্বপ্নদোষের ঘরোয়া প্রতিকার

  • আপনার যদি স্বপ্নদোষের সমস্যা থাকে তবে এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলো মেনে চলতে হবে এবং তাতে স্বপ্নদোষের সমস্যার থেকে মুক্তি পাবেন।
  • খাবার সময়ে ৪ গ্রাম মিছরির সাথে কর্পূর মিশিয়ে যদি কিছুদিন খেতে পারেন তাহলে এই সমস্যার হাত থেকে মুক্তি পাবেন।
  • বেনারসি হরীতকীর মোরব্বা যদি এক গ্রাম করে খাওয়া যায় তবে অনেক কঠিন স্বপ্নদোষের রোগও সেরে যায়।
  • তেঁতুলের বীজ ভেজে নিন ও সেটা সমান পরিমাণের চিনির সাথে মিশিয়ে রোজ যদি গরুর দুধের সাথে খেতে পারেন তাহলে স্বপ্নদোষের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
  • খাবার খাওয়ার পরে পাকা কলার সাথে ২-৪ ফোঁটা মধু মিশিয়ে নিয়ে পান করা স্বপ্নদোষের একটি জরুরি প্রতিকার। এতে বীর্যের বৃদ্ধি হয়।
  • ৩ গ্রাম শুকনো ধনেপাতা, আধ গ্রাম ছোট এলাচের বীজ ও ২ গ্রাম মিছরি একসাথে গুঁড়ো করে রোজ সকালে ও বিকেলে জলের সাথে খেলে স্বপ্নদোষের প্রতিকার করা সম্ভব।
  • তাজা নিমের পাতা রোজ চিবিয়ে খেলে স্বপ্নদোষের হাত থেকে শীঘ্রই মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
  • রসুনের ৩ থেকে ৪টি কোয়া ৫ গ্রাম মধুর সাথে খেয়ে মোষের গরম দুধ পান করলে স্বপ্নদোষ হবে না।
  • শোয়ার সময় ত্রিফলা চূর্ণ মধুতে মিশিয়ে চেটে খেলে স্বপ্নদোষ বা অনিচ্ছাকৃত ধাতুর নির্গমনের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। এটা আপনি গরম জলের সাথেও পান করতে পারেন।
chat_icon

Ask a free question

Get FREE multiple opinions from Doctors

posted anonymously
doctor

View fees, clinc timings and reviews
doctor

Treatment Enquiry

Get treatment cost, find best hospital/clinics and know other details