স্বপ্নদোষঃ নিয়ন্ত্রণের ১০টি উপায়
নাইটফল বা স্বপ্নদোষ, পুরুষদের মধ্যে একটি অতীব সাধারণ সমস্যা। মোটামুটি সব বয়সের পুরুষেরাই এই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন কিন্তু সাধারণত ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী পুরুষেরা এটি বেশি অভিজ্ঞতা করে থাকেন। সাধারণত, ঘুমের সময় বীর্যের এই স্রাব শরীরের মধ্যে হরমোন পরিবর্তনের জন্য হয়ে থাকে। পুরুষদের বয়ঃসন্ধিকালের শুরুতে, যৌন আকাঙ্ক্ষার সাথে হরমোনগত পরিবর্তনগুলি উদ্দীপনার সৃষ্টি করে এবং রাতের বেলা সেই কারণে নাইটফল বা স্বপ্নদোষ হতে পারে।
এছাড়াও হরমোনাল পরিবর্তন ছাড়া অন্যান্য অনেক কারণেও নাইটফল বা স্বপ্নদোষ হতে পারে। যেমন, পর্নোগ্রাফি দেখা, অতিরিক্ত হস্তমৈথুন, যৌন সংলগ্ন বার্তালাপ ( বিশেষত রাতের দিকে) ইত্যাদি নাইটফল বা স্বপ্নদোষ ঘটাতে পারে। উত্তেজক বা যৌন সম্পর্কিত স্বপ্নও নাইটফল বা স্বপ্নদোষ এর কারণ হতে পারে।
নাইটফল বা স্বপ্নদোষকে সাধারণত অক্ষতিকারক হিসেবে ধরা হয় যদি এটা হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে ঘটে তাহলে। যদিও এর লক্ষণ গুলিকে ভালো ভাবে চিহ্নিত করা জরুরি। লক্ষণ যেমন, টেস্টিক্যালস এ যন্ত্রনা, গ্যাস্ট্রিক এর অসুবিধে, বদহজম, অবসাদ ও অমনোযোগী হওয়া, এগুলি হলে চিকিত্সাবিদ্যা বিষয়ক ব্যাপার হিসেবে ধরা হয়। খুব অল্প বয়সে নাইটফল বা স্বপ্নদোষ হলে, এটি অব্যবহৃত লিঙ্গ এর কারণ হিসেবেও ধরা হয়। এই সমস্যাটি এমনকি একটি বড় মানসিক এবং সামাজিক সমস্যা হিসেবেও মানা হয়ে থাকে। পুরুষরা বিব্রত বোধ করে যদি তারা রাতের বেলা এরম নাইটফল বা স্বপ্নদোষ এর শিকার হন, এবং তারা এই পরিস্থিতি সম্পর্কে উদ্বিগ্ন ও দুঃখভোগকারী হয়ে ওঠেন,যা বেক্তিগত ও সামাজিক সম্পর্ক সহ তাদের স্বাভাবিক সামাজিক ক্রিয়াকলাপে হস্তক্ষেপ করে। সেই কারণে এই সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে দু রকমের চিকিৎসা করা হয়ে থাকে, একটি মানসিক ও অন্যটি শারীরিক।
নিম্নলিখিত কিছু সহজ উপায় আলোচনা করা হলো যার সাহায্যে নাইটফল বা স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি সহজেই পাওয়া যেতে পারে:
- নাইটফল বা স্বপ্নদোষ, সাধারণত উত্তেজনা থেকে বেশি হয়। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে নিজেকে শান্ত রাখুন, গভীর স্বাস নিন বা পারলে মেডিটেশন করুন।
- বিশেষ করে রাতের দিকে যৌন সম্পর্কিত বিষয়বস্তু দেখা বন্ধ করুন ও তার বদলে ঠান্ডা ও শান্ত সংগীত সোনার চেষ্টা করুন।
- বটল লাউ -এর জুস, নাইটফল বা স্বপ্নদোষকে রুখতে সাহায্য করে কারণ এই জুস টি শরীর কে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে থাকে।
- গবেষণা করে দেখা গাছে যে নিষ্ক্রিয় মানুষেরা সাধারণত বেশি নাইটফল বা স্বপ্নদোষ এর শিকার হয়ে থাকেন।দিনে কম করে ৪৫ মিনিট ব্যায়াম করতে পারলে এই ধরণের সমস্যা থেকে দূরে থাকাকে যেতে পারে।
- উদ্বেগ, বিষন্নতা এবং চাপ, এই ধরণের সমস্যা কে বাড়াতে পারে। এবং এগুলি নাইটফল বা স্বপ্নদোষ এর জন্য বিভিন্ন চিকিৎসাকেও অকার্জকরী করে দিতে পারে। শান্ত ও নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করুন ও বিনা কারণে চিন্তা করা বন্ধ করুন।
- নিজের চিন্তা ভবনকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা কেও নাইটফল বা স্বপ্নদোষ এর কারণ হিসেবে ধরা হয়. সে ক্ষেত্রে মেডিটেশন বা যোগ ব্যায়াম খুবই কার্যকর।
- একটা হালকা গরম স্নান, শুতে যাওয়ার আগে, নাইটফল বা স্বপ্নদোষ এর সাথে লড়ার জন্য অত্যন্ত উপযোগী।
- তুলশিপাতার রস মেশানো চা ও এই ধরণের সমস্যার জন্য খুবই কার্যকর।
- অশ্বগন্ধা, ত্রিফলা পাউডার বা শিলাজিত মত বিভিন্ন হার্বস আয়ুর্বেদীয় মতে, এই ধরণের সমস্যার প্রতিকার হিসেবে প্রমাণিত। এগুলির নিয়মিত সেবন, শুধুমাত্র নাইটফল বা স্বপ্নদোষ এর সাথে লড়ার জন্য নয়, এমনকি হারিয়ে যাওয়া শারীরিক ও মানসিক শক্তি এবং জীবনীতা পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে।
- দৈনন্দিন স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাদ্য, দৃঢ়ভাবে এই সমস্যার সঙ্গে যুক্ত দুর্বলতা এবং অন্যান্য উপসর্গ প্রতিরোধ করার জন্য সুপারিশ করা হয়।এছাড়া আপনি কোন নির্দিষ্ট সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করতে চান, আপনি একটি যৌন বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করতে পারেন।