Lybrate Logo
Get the App
For Doctors
Login/Sign-up
Last Updated: Jan 07, 2023
BookMark
Report

চুলপড়ার সমস্যায় ঘরোয়া প্রতিকার

Profile Image
Dr. Sanjeev Kumar SinghAyurvedic Doctor • 15 Years Exp.BAMS
Topic Image

চুল পড়ে যাওয়া আজকাল দ্রুত ছড়িয়ে পড়া এক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। চুল পড়ে যাওয়া থেকে পরিত্রাণ পেতে অনেক মানুষ শ্যাম্পু পরিবর্তন করার কথা বিবেচনা করেন। এতে সাময়িক সমাধান হলেও চুল পড়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। চুলে সঠিক পুষ্টি না মিললে বা কোন ধরনের সংক্রমণ অথবা কখনও কখনও উদ্ভব সম্বন্ধীয় কারণের জন্যও চুল পড়ে যেতে পারে। অতএব, চুল পড়ে যাওয়া প্রতিরোধ করতে বিস্তারিতভাবে সমস্যাটি বুঝতে হবে।

চুল পড়া প্রতিরোধের চিকিৎসাগত পদ্ধতি

  • ভিটামিন ডি-এর ভূমিকা

    ভিটামিন-ডি চুল বৃদ্ধির জন্য একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ভিটামিন-ডি এর বিশেষত্ব এটি আয়রন এবং ক্যালসিয়াম শোষণ করে। আয়রনের ঘাটতি চুল পড়ার আরেক কারণ। যদি আপনি প্রতিদিন ১৫ মিনিটের জন্যও সূর্যের রশ্মির সরাসরি সংস্পর্শে আসেন তবে আপনার জরুরি ভিটামিন ডি-এর ডোজ পেয়ে যাবেন। কিন্তু অতিরিক্ত গরমে সরাসরি সূর্যের রশ্মি এড়াতে হবে।

  • পুষ্টিকর খাবার খান

    পুষ্টিকর খাদ্য অনেক সমস্যা থেকে আপনাকে রক্ষা করার কাজ করে। এখানে বলা দরকার যে রাস্তার খাবার, টিনজাত খাদ্য, তৈলাক্ত খাবার ইত্যাদিতে পুষ্টিকর উপাদানগুলির অভাব রয়েছে। অতএব, সেগুলো খেলে আপনার শরীর সঠিক পরিমাণে আয়রন, ক্যালসিয়াম, দস্তা, ভিটামিন-সি এবং প্রোটিন পায় না। এইগুলো চুল বৃদ্ধির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ, পুষ্টিকর খাবারের অভাব পূরণ করতে সবুজ শাকসবজি, ফল, শুকনো ফল, দুধ এবং ডিম খান।

  • ধূমপান এড়িয়ে চলুন

    ধূমপান এথেরোস্ক্লেরোসিসের কারণ। এটার জন্য আপনার শরীরের স্নায়ু এবং শিরার উপর অপ্রয়োজনীয় উপাদানের স্তর জমে। এই কারণে সারা শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাধা পায়। এমন ক্ষেত্রে, আপনি পুষ্টিকর খাবার খেলেও পুষ্টিকর উপাদান আপনার চুলের শিকড় পর্যন্ত পৌঁছতে পারে না। কারণ এথেরোস্ক্লেরোসিসের জন্যে আপনার মাথায় পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্তে পৌঁছয় না। এবং এই কারণে আপনার চুল দুর্বল হয়ে পড়ে যায়।

  • ক্ষতিকারক রাসায়নিক ব্যবহারকে এড়িয়ে চলুন

    অনেক লোক নিজেদের চুল পড়া থামানোর সবচেয়ে সহজ উপায় খুঁজে পায় শ্যাম্পু পরিবর্তনের মাধ্যমে। বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে তারা বহুবার ক্ষতিকারক রাসায়নিক সম্পন্ন শ্যাম্পুও ব্যবহার করে ফেলে। চুল পড়ে যাওয়া তো এতে কমেই না বরং আরও বৃদ্ধি পায়। তাই এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যে এর যথাযথ চিকিৎসা করা উচিত।

  • অত্যধিক গরম এবং চুলে রঙ করা এড়িয়ে চলুন

    যদি আপনার চুল পড়ার সমস্যা থেকে থাকে, তবে আপনার অত্যধিক রোদের তাপ এবং চুলে রং করা এড়ানো উচিত। অতএব, যদি না খুব প্রয়োজন হয় আপনার চুলে রাসায়নিক প্রয়োগ এড়ানো উচিত।

  • ব্যায়ামের ভূমিকা

    ব্যায়াম আপনার শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। এটার সুবিধা হল শরীরের যেসব ছিদ্রে রক্ত পৌঁছায় না সেখানেও রক্ত প্রচলন শুরু হয়। মাথার চুল আসলে আমাদের শরীরের সব থেকে উপরের অংশে অবস্থিত। এই রক্ত ছিদ্রে অনেক সময় সঠিক পুষ্টি ও রক্ত পৌঁছাতে পারে না। সুতরাং, যখন আমরা ব্যায়াম করি শরীরের রক্তসংবহনে সামগ্রিক তীব্রতা বাড়ার কারণে মাথার উপরের অংশেও সঠিক পরিমাণে রক্ত আর পুষ্টি সঞ্চালন হয়। এতে আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে।

  • জলের ভূমিকা

    আপনার ত্বক, চুল, রক্ত, শুক্রাণু, ইত্যাদি সবকিছুকে সুস্থ রাখতে এবং দক্ষতার সাথে তাদের কাজ করতে জলের প্রয়োজন পড়ে। আপনি যখন জল খান তখন আপনি আপনার কোষ এবং ইন্দ্রিয়গুলিকে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করেন। একই সঙ্গে আপনার রক্ত সঞ্চালনের উন্নতি হয় আর কোনও রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। আপনার চুলের শিকড়ও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। যকৃত এবং আপনার ত্বকের বিভিন্ন স্তর থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করে ফেলে দেয়ে। এছাড়াও, জল আপনার চুলে একটি অনন্য জেল্লা আনে এবং চুল স্বাস্থ্যকর এবং শক্তিশালী রাখে।

  • মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন

    এটা স্পষ্ট যে মানসিক চাপ অনেক রোগের জন্ম দেয়। তার মধ্যে একটা হল চুল পড়ে যাওয়া। অতএব, আপনি যদি অপ্রয়োজনীয় অসুস্থতা এড়াতে চান, তাহলে মানসিক চাপকে বিদায় জানান। যদিও, বলা খুব সহজ কিন্তু করাও খুব একটা কঠিন না। আপনাকে শুধু সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এর জন্য আপনি যোগব্যায়াম বা ধ্যান করতে পারেন।

চুল পড়ে যাওয়ার প্রতিকার করার ঘরোয়া উপায়

  1. চুলে দই মাখুন

    দই চুল পড়া প্রতিরোধ করার জন্য একটি খুব কার্যকর এবং সহজ প্রতিকার। আপনি চুল ধোয়ার আগে এটি ব্যবহার করুন। চুল ধোয়ার আগে চুলে প্রায় ৩০ মিনিট দই মাখুন। যখন চুল সম্পূর্ণরূপে শুকিয়ে যাবে তখন ধুয়ে নিন। স্নানের আধা ঘণ্টা আগে বড় চামচের পাঁচ চামচ দই, একটি বড় চামচ লেবুর রস আর দুটো বড় চামচের কাঁচা চানার গুঁড়ো মিশিয়ে পেস্ট বানিয়েও চুলে লাগান।

  2. মধু

    অনেক রোগ অপসারণ করার ক্ষমতাশালী মধু চুলে প্রয়োগ করলে চুল পড়াও কমে যায়। এছাড়াও, আপনি চুলে দারচিনি এবং মধু মিশিয়েও লাগাতে পারেন। গরম অলিভ অয়েলে এক চামচ মধু এবং এক চামচ দারচিনির গুঁড়ো মেশান এবং পেস্ট বানিয়ে স্নান করার আগে চুলে এটি প্রয়োগ করুন। কিছু সময় পরে চুল ধুয়ে নিন। এর ফলে চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন।

  3. মেথি

    চুল পড়া বন্ধ করার জন্য এক কাপ জলে কয়েক চামচ মেথির বীজ গুঁড়ো করে ভিজিয়ে নিন। আপনার চুলে এই মিশ্রণ লাগিয়ে রেখে ৪০ মিনিট পরে চুল সোডা দিয়ে ধুয়ে নিন। আপনি প্রায় এক মাসের মধ্যে এর প্রভাব দেখতে পাবেন।

  4. রোজমেরি তেল

    চুল পড়া থামাতে আর চুলকে শক্তিশালী করে তুলতে প্রতিদিন আপনার চুলে রোজমেরি তেল লাগান। এতে চুল বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও, জবাকুসুমের পাতা অল্প জলে মিশ্রিত করে পেস্ট বানিয়ে মাথায় এবং চুলে লাগালে চুল বড় এবং ঘন হয়ে ওঠে।

  5. হেনা

    হেনার পাতা গুঁড়ো করে এবং তাতে দই আর ডিম মিশিয়ে চুলের মধ্যে প্রয়োগ করুন। এটাকে ৩০ মিনিটের জন্য ছেড়ে দিন এবং তারপরে জল দিয়ে ধুয়ে নিন। এই উপায়ের প্রভাব ১৫ দিনের মধ্যেই দেখতে পাবেন।

প্রাকৃতিক উপায়

  • চুল পড়ার একটা কারণ হল চুল জড়িয়ে যাওয়া। আপনার অন্তত দিনে ২ থেকে ৩ বার চুল আঁচড়ানো উচিত। এতে চুল ঠিকও থাকবে এবং পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।
  • তাপ এবং ধুলো থেকে চুলকে রক্ষা করুন। বাইরে অতিরিক্ত রোদে ছাতা নিয়ে বেরোন এবং যতটা সম্ভব চুল ঢাকা দিয়ে বেরোন।
  • ঠাণ্ডা আবহাওয়াতে মানুষ গরম জল দিয়ে স্নান করতে চায়। কিন্তু যখন জল খুব গরম হয়, তখন আপনার চুলও পড়ে যায়।
  • চুল পুষ্ট করার জন্য প্রোটিন, লোহা, দস্তা, সালফার, ভিটামিন-সি আর ভিটামিন-বি রয়েছে এমন খাদ্য প্রচুর পরিমাণে খান।
  • আমলা, বাদাম, জলপাই তেল, নারকেল তেল, সরিষা ইত্যাদি চুলকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। সপ্তাহে কমপক্ষে দু’বার অবশ্যই এগুলো লাগানো উচিত।
chat_icon

Ask a free question

Get FREE multiple opinions from Doctors

posted anonymously
doctor

View fees, clinc timings and reviews
doctor

Treatment Enquiry

Get treatment cost, find best hospital/clinics and know other details