ফ্যাটি লিভারের জন্য ৫টি হোমিওপ্যাথি ওষুধ
বর্তমানে একাধিক শারীরিক অসুস্থতার কারণ হল অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন। তার মধ্যে একটি অবস্থা হল ফ্যাটি লিভার বা লিভারে ফ্যাট জমা হওয়া। লিভারে ফ্যাট উৎপন্ন হওয়ার অবস্থাকে ফ্যাটি লিভার বলা হয়। যকৃৎ, আপনি যা খান বা পান করেন তা হজম করতে সাহায্য করে এবং রক্ত থেকে ক্ষতিকারক পদার্থকে অপসারণ করে। যদি লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমা হয়, তাহলে এই প্রক্রিয়াতে বাধা সৃষ্টি হয়। এটি চর্বি যকৃতে সংক্রমণ ছড়ায় এবং পরবর্তী সময়ে এটি লিভার ফীব্রসিসে পরিণত হয়। ফ্যাটি লিভার এমনিতেই ক্ষতিকারক, কিন্তু যখন উচ্চ পর্যায় পৌঁছে যায় তখন এটা জীবন-মরনের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়।
ফ্যাটি লিভার হওয়ার কারণগুলি হল মদ খাওয়া, ভুল খাদ্য গ্রহণ করা, স্থূলতা, মধুমেহ এবং বেশি পরিমাণে ঔষধ গ্রহণ করা।
আপনি যদি এটিকে নিয়ে অবহেলা করেন তাহলে নানান লিভারের সমস্যা দেখা যায় যা স্থায়ী এবং অপরিবর্তনীয়, এবং এতে আপনার জীবন সংশয়ের ঝুঁকিও বেড়ে যাবে। ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসার কোন স্থায়ী চিকিৎসা হয় না। যদি শুরুর দিকে রোগটি নির্ণয় করা যায় তাহলে এর অন্তর্নিহিত কারণ খুঁজে বের করে তার চিকিৎসা করা যায় এবং পুনরায় সুস্থ করে তোলা যায়। হোমিওপ্যাথি রোগের অন্তর্নিহিত কারণকে খুঁজে বের করে এবং এটি ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসার জন্য আদর্শ। এটি এই রোগের লক্ষণকে কমায় এবং লিভারের কাজকে সচল রাখে এবং অবস্থার পরিবর্তন ঘটে যদি শুরুতেই চিকিৎসা করা হয়।
হোমিওপ্যাথি ঔষধ প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি হয়, যা বহু গবেষণার পর রোগের লক্ষণ গুলি বিবেচনা করে রোগীকে দেওয়া হয়। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা খুব জনপ্রিয়। এই প্রতিকারে প্রত্যেকের লক্ষণ আলাদা ভাবে বিবেচনা করার পরই কোন সার্বিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। হোমিওপ্যাথি ফ্যাটি লিভারের সমস্ত লক্ষণ গুলির প্রতিকার করতে দক্ষ এবং এই অবস্থার অবসান ঘটিয়ে পুনরায় ফিরে আসতে দেয় না।
ফ্যাটি লিভারের জন্য কিছু সাধারণ হোমওপ্যাথি ঔষধ-
- চেলিডোনিয়াম- পেটের ডান দিকে অস্বাভাবিক ব্যথা যা ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ, তা নির্মূল করতে এটি সহায়ক। এই ক্ষেত্রে, লিভারের আকার বেড়ে যায় এবং রোগী কোষ্ঠকাঠিন্য, বমি বমি এবং বমির সমস্যায় ভোগেন। এবং রোগীর মধ্যে অত্যাধিক দুর্বলতা দেখা যায় এবং গরম খাদ্য ও পানীয় খাবার ইচ্ছা রাখে।
- লাইকোপডিয়াম- যদি গ্যাস বা অম্লতার সমস্যার জন্য ফ্যাটি লিভারের সমস্যা দেখা যায় তাহলে সেক্ষেত্রে এটি খুব উপকারী। এই ক্ষেত্রে রোগীর পেটের সমস্যা এবং জ্বালাভাব অনুভব করেন। এই ক্ষেত্রে রোগীর সন্ধ্যার দিকে শরীর খারাপ হয়ে যায় এবং মিষ্টি জাতীয় বা গরম পানীয় খেতে ইচ্ছা করে।
- ফসফরাস-এটি সেই ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় যখন ঢেকুরের সাথে ফ্যাটি অ্যাসিড বের হয়। অনেক সময় রোগী এক্ষেত্রে পেটে ব্যথা অনুভব করে। এর সাথে বমি হয় এবং শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে।
- ক্যালকেরিয়া কার্ব-মোটা রোগীদের ক্ষেত্রে এই রোগের চিকিৎসা করা হয় ক্যালকেরিয়া কার্ব দিয়ে। এইসব মানুষের পেট ভার হয়ে থাকে, ল্যাকটোজের সমস্যা হয় এবং দীর্ঘ সময় ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা থাকে। এরা সবসময় ঠাণ্ডা জায়গায় থাকতে ভালোবাসে এবং প্রচণ্ড ঘেমে যায়।
- নাক্সভোমিকা- যে ফ্যাটি লিভারের ক্ষেত্রে কোন কিছুখাওয়ার পর পেট ব্যথা হয় তার প্রতিকার হিসাবে নাক্সভোমিকা ব্যবহার করা হয়।
অত্যাধিক অ্যালকোহল খাওয়ার জন্য যে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা দেখা দেয় এবং সেক্ষেত্রে পেট ব্যথাও হয় সেই চিকিৎসার জন্য নাক্সভোমিকা খুব উপকারী। এই ধরণের রোগীর কোন কিছু তেতো খাওয়ার কয়েক ঘণ্টার পড়ে পেটে ব্যথা শুরু হয়। তাদের ক্রমাগত মল বের করার অনুভূতি পায় কিন্তু তারা তা করতে পারে না। হোমওপ্যাথি ঔষধ যদি কম পরিমাণে গ্রহন করা হয় তাহলে তার কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয় না, কিন্তু কখনওই নিজে থেকে কোন ঔষধ গ্রহন করা উচিৎ নয়। আপনি যদি ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভোগেন, তাহলে দ্রুত হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন যে আপনার রোগ অনুযায়ী আপনার সঠিক চিকিৎসা করবে।