থাইরয়েডের চিকিৎসা
থাইরয়েড আমাদের গলাতে পাওয়া একটি গ্রন্থি যার বড় হয়ে যাবার ফলে সমস্যা হতে পারে। থাইরয়েড এর কাজ হলো সে আয়োডিনের ব্যবহার করে দরকারি থাইরয়েড হরমোন বানায় এবং আমাদের শরীরের সব অংশে সেটি ছড়িয়ে দেয় কিন্তু যখন ইহা দরকার এর থেকে বেশি হরমোন বানাতে থাকে তখন সমস্যা সৃষ্টি হয়। এই রোগ মহিলাদের মধ্যে সময়ের সাথে সাথে বেশি বেড়ে যায়। কিছু মহিলারা বুঝতে পারেন না যে তারা থাইরয়েডের শিকার কারণ তারা ইহার লক্ষণ বুঝতে পারে না। বন্ধুরা থাইরয়েড গ্রন্থি দ্বারা হওয়া সমস্যা এর লক্ষন এবং তার চিকিৎসার উপায় জানার আগে এটি জেনে নিন যে থাইরয়েড গ্রন্থি জিনিসটি কি। থাইরয়েড গ্রন্থি শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ গুলির মধ্যে একটি। থাইরয়েড গ্রন্থি শরীরের বাকি অংশের সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। এর জন্য থাইরয়েড গ্রন্থি থাইরয়েড আয়োডিন বানায় এবং যখনথাইরয়েড গ্রন্থি দরকার এর থেকে বেশি বা কম থাইরয়েড আইডি বানাতে থাকে তখন থাইরয়েডের ক্ষতি হতে পারে এবং আমাদের থাইরয়েডের চিকিৎসা করতে হতে পারে।
থাইরয়েড গ্রন্থি বেড়ে গেলে এছাড়াও অনেক সমস্যা হতে পারে। থাইরয়েড গ্রন্থির কারনে শরীরের অনেক অংশ প্রভাবিত হয়। থাইরয়েড যেকোনো বয়সের লোকের মধ্যে হতে পারে। থাইরয়েড মুখ্য রূপে দুই প্রকারের হয়।
- হাইপো থাইরইডিজম
হাইপো থাইরয়েডিজম ব্যক্তিটির থাইরয়েডেমধ্যে থাইরক্সিন হরমোন এর পরিমাণ কম করে।
-
হাইপার থাইরয়েডিজম
হাইপার থাইরয়েডিজম এর ফলে শরীরে থাইরক্সিন হরমোন খুবই দ্রুততার সাথে বাড়তে থাকে।
থাইরয়েডের কারণ
- শরীরে আয়োডিনের মাত্রা কম বা অধিক হলে থাইরয়েডের সমস্যা হতে পারে।
- দূষণের জন্য থাইরয়েড জনিত অসুস্থতা হতে পারে। আবর্জনা এবং দূষণের কারণে হাওয়ার সাহায্যে বিষাক্ত জীবাণু আমাদের থাইরয়েড গ্রন্থির ক্ষতি করে।
- ওষুধের অত্যাধিক সেবন এবং ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকে আপনার থাইরয়েড গ্রন্থির ক্ষতি হতে পারে।
- থাইরয়েডের অসুস্থতা বংশানুক্রমিক হয়ে থাকে। এর অর্থ হল যদি আপনার পরিবারের কারোর এই অসুস্থতা হয় তাহলে আপনার মধ্যেও এই অসুস্থতা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
থাইরয়েডের লক্ষণ
- ওজন বেড়ে যাওয়া
সব থেকে বড় লক্ষণ এই হল যে যখন শরীরে থাইরয়েড হয় তখন মেটাবলিজম আস্তে হয়ে যায় এবং শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট এর জমা শুরু হয়ে যায়। অধিক ওজন হয়ে যাওয়া থাইরয়েড এর একটি লক্ষণ।
-
নখ এবং চোখের রুক্ষতা
যখন শরীরে থাইরয়েড হয় তখন হাত এবং পা এর নখ শুষ্ক এবং রুক্ষ হতে থাকে এবং এর মধ্যে সাদা লাইন পড়ে যায় এবং নখগুলি তাড়াতাড়ি ভেঙে যায়। এছাড়াও মহিলাদের মধ্যে চোখে ব্যথা, চুলকানি এবং চোখ লাল হয়ে পড়া এর মত সমস্যা দেখা যায়।
-
যৌন উত্তেজনা শেষ হওয়া
থাইরয়েড এর লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার পর অনেক মহিলাদের ক্ষেত্রে যৌনতার প্রতি সম্পূর্ণরূপে রুচি কমে আসে এবং তাদের মধ্যে ধীরে ধীরে যৌনতার প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি হয়।
-
তাড়াতাড়ি ক্লান্তি অনুভব হওয়া
যখন আপনি কোন হালকা কাজ করেন এবং আপনি ক্লান্তি অনুভব করেন তাহলে আপনার সতর্ক হতে হবে যে আপনার থাইরয়েড হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
-
মাসিকে পরিবর্তন
থাইরয়েডের কারণে মহিলাদের হওয়া মাসিকচক্রে প্রভাব পড়ে। যেমন সাধারণ ভাবে চলতে থাকা ২৮ দিনের চক্র টানা ৪০ দিন পর্যন্ত চলতে পারে অথবা কম হতে পারে। এরকম হতে পারে যে আপনার পিরিয়ডস তাড়াতাড়ি শুরু হয়।
থাইরয়েডের সমস্যা হলে এইগুলি পরিহার করুন
- সাধারণ নুন খাবেন না। সব সময় সন্ধক অথবা কালো নুন খান।
- নেশার দ্রব্য সেবন করবেন না।
- বনস্পতি ঘি এর সেবন করা থেকে বিরত থাকুন।
- রেড মিট এর সেবন কখনো করবেন না।
থাইরয়েড কি শেষ করার কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি
- লাউ
থাইরয়েডের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে রোজ সকালে খালি পেটে লাউ এর শরবত পান করুন। এর পরে এক গ্লাস টাটকা জলে এক দুই ফোটা তুলসির রস এবং কিছু মাত্রায় অ্যালোভেরা জুস পান করুন। এখন আপনি আধ থেকে এক ঘন্টা পর্যন্ত কিছু খাবার গ্রহণ বা কিছু পান করবেন না। প্রতিদিন এরকম করলে থাইরয়েডের ওষুধ তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাবে।
-
ভিটামিন এ
থাইরয়েড রোগীদের নিজের খাবারে ভিটামিন এ এর পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। ভিটামিন এ থাইরয়েড কে ধীরে ধীরে কম করে। গাজর এবং সবুজ পাতা যুক্ত শাক সবজিতে ভিটামিন এ অধিকমাত্রায় পাওয়া যায়।
-
গোলমরিচ
থাইরয়েড ঠিক করতে চাইলে তাড়াতাড়ি গোলমরিচের সেবন শুরু করে দিন। গোলমরিচের সেবন করলে থাইরয়েডের অসুখ ঠিক হয়ে যায়। গোলমরিচ সেবন আপনি যে কোন রকম ভাবে করতে পারেন।
-
সবুজ ধনে পাতা
সবুজ ধনে পাতার ব্যবহার করলে থাইরয়েড ঠিক হয়ে যায়। টাটকা সবুজ ধনে পাতাকে পিষে তার চাটনি বানিয়ে নিন। এখন এই চাটনি কে প্রত্যেকদিন এক গ্লাস জলে গুলে পান করুন এর ফলে থাইরয়েড ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রিত হতে থাকে।
-
ডিম
ডিম খাওয়া থাইরয়েড রোগীদের ক্ষেত্রে উপকারী। ডিম থাইরয়েড নিয়ন্ত্রিত রাখে।
-
আয়োডিন
থাইরয়েড রোগীদের আয়োডিন অধিকমাত্রায় সেবন করা উচিত। আয়োডিন প্রাপ্ত করার সব থেকে ভালো উপায় হল পেঁয়াজ ,রসুন, টমেটো এর মত আয়োডিনযুক্ত জিনিসের সেবন করা।
-
ব্যায়াম
আজ থেকে প্রত্যেকদিন এক ঘন্টা ব্যায়াম করুন। ব্যায়াম করলে শরীর সুস্থ থাকে এবং থাইরয়েড কে ও নিয়ন্ত্রিত করা যায়।
-
নারকেলের জল
নারকেলের জল থাইরয়েড নিয়ন্ত্রিত রাখতে সাহায্য করে। প্রত্যেকদিন যদি সম্ভব না হয় তাহলে একদিন অন্তর অন্তর নারকেলের জল পান করুন।
থাইরয়েডের সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য যোগব্যায়াম
যোগব্যায়াম করলে থাইরয়েডের সমস্যা অনেকটা পর্যন্ত কম করা যায় কারন যোগসাধনার কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না। যোগ সাধন সবসময় শরীরে কোনো না কোনো রকম ভাবে উপকারই করে। প্রত্যেকদিন সকালে আধ অথবা এক ঘন্টা এইসব যোগ সাধন করলে আপনি থাইরয়েডের সহজে চিকিৎসা করতে পারেন।
- হলাসন
- মৎস্যাসন
- বিপরীত করণ