শীঘ্রপতনের সমস্যায় ঘরোয়া প্রতিকার
যৌনসঙ্গমের সময়ে পুরুষের অকালক্ষয় বা শীঘ্রপতন এমন একটি সমস্যা যা শারীরিক ও মানসিক উভয়তেই অত্যন্ত খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। এই রোগপুরুষ এবং মহিলা উভয় সঙ্গীর মধ্যেই উদ্বেগ এবং বিষণ্নতার মতন নেতিবাচক অনুভূতি তৈরি করতে পারে। চলুন এই প্রবন্ধের মাধ্যমে শীঘ্রপতনের চিকিৎসার ব্যপারে জানা যাক।
- আদা এবং মধু
আদা সাধারণত খাদ্যে জনপ্রিয় মশলা এবং জড়িবুটির আকারে ব্যবহৃত হয়।কিছু সাধারণ রোগের জন্য,উদাহরণস্বরূপ ডাইরিয়া এবং আর্থারাইসিসের নিরাময়ের জন্য আদার ব্যবহার করা হয়। আদা যৌন সম্পর্কিত সমস্যাউদাহরণস্বরূপ, অকাল ক্ষয়ের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়। এর জন্য, এক চামচ মধুতে এক চামচ আদা মেশান। নিয়মিত এটি ব্যবহার করুন।
-
জাফরান
জাফরান অকালক্ষয়ের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। জাফরানের এই আশ্চর্যজনক ঔষধি ব্যবহার করতে, রাতে জলে দশটা বাদাম ডুবিয়ে রাখুন। পরের দিন, বাদামগুলোর খোসা ছাড়িয়ে মিক্সারের মধ্যে দিয়ে দিন। তারপর ওটায় গরুর দুধ, একটু জাফরান, আদা এবং এলাচ মিক্সারে ঢেলে ভালভাবে মিশ্রিত করুন। এই মিশ্রণটাকে প্রতি সকালে পান করা উচিত।
-
তরমুজ
অকালক্ষয়ের সমস্যা অপসারণ করতে, ছোট ছোট টুকরো করে তরমুজ কাটতে হবে। তারপর ওই টুকরাগুলোর উপর কিছু আদা গুঁড়ো এবং লবণ ছিটিয়ে নিতে হবে। তারপর খেতে হবে। তরমুজ যে কোন ফলের সালাদের সাথে যোগ করেও খাওয়া যাবে।
-
কুমড়োর বীজ
কুমড়োর বীজে ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়, যা রক্ত প্রবাহে টেস্টোস্টেরন ছড়াতে সাহায্য করে। কুমড়োর বীজ ব্যবহার করতে, প্রথমে ভালো করে বীজগুলো পরিষ্কার করুন। তারপর সূর্যের আলোয় শুকোন। একবার সঠিকভাবে শুকিয়ে গেলে, জলপাই তেলে তাদের রোস্ট করুন এবং উপরে থেকে লবণ এবং কালো মরিচ ছড়িয়ে খেয়ে নিন।
-
কস্তুরী
কস্তুরীওঅকালক্ষয়ের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়। এর জন্য, একটি পাত্রের মধ্যে জল নিন এবং এতে কস্তুরী রেখে নরম না হওয়া অবধি সেদ্ধ করুন। এর পরে এটা থেকে গরম জল বেরনো অবধি অপেক্ষা করুন। ততক্ষণ দুধটাকে জ্বাল দিন। যখন দুধ জাল দেওয়া হয়েযাবে, এতে লবণ, মরিচ এবং মাখন যোগ করুন। তারপর ঠান্ডা এবং জলহীন নরম কস্তুরী যোগ করুন। এবার মিশ্রণটি আবার জ্বাল দিয়ে কস্তুরী মিশ্রণ যোগ করুন। এখন এটি ঠান্ডা হলে নিয়মিত এটি খান।
-
অশ্বগন্ধা
অশ্বগন্ধাপুরুষ বন্ধ্যত্ব, পুরুষত্বহীনতা নিরাময়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। অশ্বগন্ধা এছাড়াও চাপ, উদ্বেগ, অনিদ্রা এবং হালকা টিউমারের বেড়ে ওঠা কমিয়ে দেয়। এক চায়ের চামচ অশ্বগন্ধার মূল এক গ্লাস দুধ এবং এক চামচ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে পান করুন। এই মিশ্রণ দৈনন্দিন পান করা উচিত।
-
খেজুর
খেজুর হৃদযন্ত্রের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যানিমিয়া, ডায়রিয়া এবং পাকস্থলীর ক্যান্সারের মত অনেক স্বাস্থ্য সমস্যার সাহায্য করে। খেজুর ওজন বাড়ানোর জন্যও ব্যবহৃত হয়। কিছু স্বাস্থ্যবিদেরমতেরোজ দুটো খেজুর খাওয়া মানে স্বাস্থ্যকর এবং সুষম খাদ্য খাওয়া।
-
অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডোতে বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা রয়েছে। এটি অকালক্ষয়ের সমস্যা অপসারণ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই সমস্যা অতিক্রম করতে, আপনার কাঁচা আভাকাডোখাওয়া উচিত। এই জন্য, বিভিন্ন তাজা ফল আর অ্যাভোকাডোদিয়ে স্যালাড বানিয়ে খাওয়া একটি ভাল ধারণা। একটি পাত্রে টমেটো, অ্যাভোকাডো আর পেঁয়াজ কেটে ওর মধ্যে পুদিনা, লেবু এবং কমলা লেবুর রস মেলানোর পর তাতে মৌরির বীজও মেশান। শীঘ্রপতনের মত সমস্যা দূর করতে এই সালাদ খাওয়া উচিত।
-
দারচিনি
দারচিনি গাছের ছাল, যা আমরা গরম মশলা দিয়ে ব্যবহার করি। সাধারণত দারচিনি শীতকালীন ঠান্ডা, গ্যাস্ট্রিক সমস্যা, ডায়রিয়া এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল অস্বস্তির জন্য ব্যবহৃত হয়। আবার দারচিনি তেল, লোশন, সাবান, পেস্ট, প্রসাধন দ্রব্যে এবং ফার্মাসিউটিকাল পণ্যেও ব্যবহার করা হয়। দারচিনি এছাড়াও ক্ষুধা উদ্দীপিত করে,মাসিকের সময়ে ক্র্যাম্পস সারানোর করে পাশাপাশি শীঘ্রপতন নিরাময়ও করে। উপরন্তু, এই পরজীবী পোকামাকড় এবং ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণও নিরাময় করে।
-
জায়ফল
জায়ফলে কামোদ্দীপক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যার কারণে এটির শীঘ্রপতন নিরাময়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী ঘরোয়া প্রতিকার। আরব এবং মালয়েশিয়ার মত দেশগুলিতে এর ঔষধি বৈশিষ্ট্যগুলি খুব পছন্দ করা হয়। জায়ফল অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন বদহজম,ব্যথা থেকে অপসারণ, শীঘ্রপতন, বিষক্রিয়াগত মাথাব্যথা অপসারণ, সারা শরীরে রক্তসংবহন ইত্যাদি থেকে ত্রাণ দেয়।
-
সবুজ পেঁয়াজ বীজ
সবুজ পেঁয়াজ বীজ শীঘ্রপতনের উপসর্গ দূর করবার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটা সব ঋতুতে উৎপাদিত হতে পারে। পেঁয়াজের কামোদ্দীপক বৈশিষ্ট্য অকালক্ষয়ের সমস্যায় সাহায্য করে।
-
শতমূলী এবং দুধ
লিলি পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত শতমূলী তার ঔষধি বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য পরিচিত। শতমূলীর সব অংশ খুব উপকারী। শতমূলীর জড়িবুটি লাল, সবুজ এবং সাদা রঙে আসে। শীঘ্রপতন প্রতিরোধ করতে, এক কাপ দুধের মধ্যে দুটি চামচ শতমূলী মিশ্রিত করুন। এখন মিশ্রণটি গরম করে গরুর দুধ মিশ্রিত করে পান করা উচিত।