Lybrate Logo
Get the App
For Doctors
Login/Sign-up
Last Updated: Nov 24, 2021
BookMark
Report

ঋতুস্রাব কিঃ

Profile Image
Dt. RadhikaDietitian/Nutritionist • 16 Years Exp.MBBS, M.Sc - Dietitics / Nutrition
Topic Image

সবসময় হাসতে থাকা, খেলতে থাকা মেয়েটাও মাসের কয়েকটা দিন চুপচাপ হয়ে যায়, দুখী হয়ে যায়, লজ্জায় সবার থেকে নিজেকে লোকাতে চেষ্টা করে। আমরা যদি লক্ষ্য করি তাহলে দেখা যাবে এই সময় বাড়ির লোকও কিছু জায়গায় যাওয়া বা কোন কিছু স্পর্শ করতে নিষিদ্ধ করে। আপনারা ঠিকই বুঝেছেন, আমরা পিরিয়ডস অর্থাৎ ঋতুস্রাবের কথা বলছি। এটা শুধু মহিলাদের জন্য নয় বরং পুরুষজাতি, পুরো মানবজাতির বুদ্ধি বিকাশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। তাহলে আসুন আজকে আমরা পিরিয়ডস কি, কেন হয়, এটি হবার সঠিক সময়, এর গুরুত্ব ইত্যাদি সম্পর্কে জানব।

পিরিয়ডস অর্থাৎ ঋতুস্রাব মহিলাদের প্রতি মাসে যোনি থেকে নিঃসৃত লাল স্রাবকে বলা হয়। মহিলাদের ঋতুস্রাব সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান না থাকায় নানান সমস্যায় পড়তে হয়। প্রথমবার ঋতুস্রাব হলে জ্ঞান না থাকার কারণে মেয়েরা ভয় পেয়ে যায়। শুধু তাই নয় তারা লজ্জা পায় এবং তাদের মধ্যে একটা অপরাধ কাজ করতে থাকে।

ঋতুস্রাবকে রোজাধর্ম বলা হয়। এই মাসিক চক্র শরীরের অন্যান্য শারীরিক ক্রিয়ার মতই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর দ্বারাই সংসার চলে। এটি ছাড়া মনুস্যর জন্ম হওয়া সম্ভব নয়। প্রকৃতির দান হিসাবে মহিলাদের গর্ভে ডিম্বাশয় ফেলিওপিয়ান টিউব এবং যোনি রয়েছে যার দ্বারা তারা সন্তান উৎপাদন করতে সক্ষম। এই জন্য ঋতুস্রাব হওয়াটা গর্বের বিষয়, লজ্জার বিষয় নয়। শুধু একে বুঝতে হবে এবং সামলাতে হবে। এই প্রক্রিয়া নিয়ে ভয় পাবার এবং একে খারাপ বা নোংরা ভাবার কোনো কারণ নেই। ঋতুস্রাবকে শরীরের অন্যান্য গতিবিধির মতই তুলনা করা উচিৎ যেমন কাশি হয়, জ্বর হয়, অথবা খিদে পাওয়া বা মূত্র পাওয়া ইত্যাদি।

মাসিক চক্র

  • ঋতুস্রাবের মধ্যবর্তী সময়কে মাসিক চক্র বলে। ঠিক সময়ে নিয়মিত ঋতুস্রাব হওয়ার মানে আপনার শরীরে সব প্রজনন অঙ্গ গুলি সুস্থ রয়েছে এবং সঠিক ভাবে কাজ করছে। মাসিক চক্রের ফলে শরীরে এমন হরমোন উৎপাদিত হয় যা শরীরকে সুস্থ রাখে। প্রত্যেক মাসে এই হরমোন গুলি শরীরকে গর্ভধারণের জন্য প্রস্তুত করে।
  • ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার প্রথমদিন থেকে পরের ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার প্রথমদিন পর্যন্ত মাসিক চক্র গণনা করা হয়। মেয়েদের মধ্যে এই মাসিক চক্র ২১ দিন থেকে ৪৫ দিন এবং মহিলাদের মধ্যে এই মাসিক চক্র ২১ দিন থেকে ৩১ দিন পর্যন্ত হতে পারে। সাধারণ ভাবে এই মাসিক চক্র ২৮ দিনের হয়।

মাসিক চক্রের সময় শারীরিক পরিবর্তন

  • হরমোনের পরিবর্তন

    মাসিক চক্র শুরু হবার সময় এস্ট্রোজেন নামক হরমোনের পরিমাণ বৃদ্ধি হতে থাকে। এই হরমোন শরীরকে সুস্থ রাখে, বিশেষ করে হাড়কে মজবুত রাখতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি এই হরমোনের ফলে গর্ভশয় অবস্থায় রক্ত এবং কোষের ওপর একটা পর্দা তৈরি করে যাতে ভ্রুনের দ্রুত বিকাশ ঘটে।

  • ডিম্বস্ফোটন

    সন্তানের জন্মের সময়, ডিম্বাশয়গুলির মধ্যে একটি উন্নত ডিম, ডিম্ব থেকে উদ্ভূত হয় এবং ফ্যালোপিয়ান টিউবগুলিতে পৌঁছে যায়। একে ডিম্বস্ফোটন বলা হয়। সাধারণত মাসিক চক্রের 14 তম দিনে এটি ঘটে। কোন কারণের কিছু আগে পিছে হয়ে যায়। ডিম্বস্ফোটন সময় এস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছে যায়। এই কারণে, জনন অঙ্গের চারপাশে রক্ত সঞ্চালন প্রবাহ বেড়ে যায়। যোনি স্রোতে পরিবর্তন দেখা যায়। যার ফলে মহিলাদের মধ্যে যৌন মিলনের ইচ্ছা বেড়ে যায়। তাই এই সময় যৌন মিলন করলে গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

  • ডিম

    ফ্যালোপিয়ান টিউবে যদি ডিম শুক্রানু দ্বারা নিসৃরন হয় তাহলে ভ্রুনের বিকাশ শুরু হয়ে যায়। নাহলে ১২ ঘণ্টার ডিমগুলি খারাপ হয়ে যায়। ডিমগুলি খারাপ হয়ে গেলে শরীরে এস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা কম হয়ে যায়। গর্ভশয়ের রক্ত এবং কোষের পর্দার প্রয়োজন শেষ হয়ে যায়। আর এই সময় অই পর্দা নষ্ট হয়ে যোনিপথে বাইরে বেরিয়ে যায়। একেই পিরিয়ডস, মাসিক, ঋতুস্রাব কিংবা রোজাধর্ম বলা হয়ে থাকে।

  • রক্ত প্রবাহ

    ঋতুস্রাবের সময়, বেশিরভাগ সময় এই প্রশ্ন আসে যে এই রক্ত প্রবাহ কত দিন অব্ধি হবে এবং কতটা পরিমাণে হওয়া দরকার যেটা সাধারণ হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে। ঋতুস্রাব অর্থাৎ মাসিক চক্রর সময় বেরনো স্রাব শুধু রক্ত থাকে না। এতে নষ্ট হয়ে যাওয়া কোষ গুলিও থাকে। সুতরাং শরীর থেকে সব রক্ত বেরিয়ে গেলে কি হবে এই ব্যাপারে চিন্তার কোন কারণ নেই। এতে রক্তের পরিমাণ প্রায় ৫০ মিলিমিটার থাকে। সাধারণত ঋতুস্রাব তিন থেকে চার দিন পর্যন্ত হয়। সুতরাং স্রাবের মাত্রাও আলাদা আলাদা হতে পারে। যদি স্রাব এর থেকে বেশি দিন পর্যন্ত হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।

ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার আগের লক্ষণ

ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার প্রথমদিকে মেয়েদের মধ্যে অনিয়মিত পিরিয়ডস, বেশি বা কম দিন পর্যন্ত পিরিয়ডস হওয়া, কম বা বেশি মাত্রায় স্রাব নিঃসরণ ইত্যাদি লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও PMS অর্থাৎ ঋতুস্রাব হবার আগের লক্ষণ দেখা যায়। বিভিন্ন মহিলাদের বিভিন্ন PMS এর লক্ষণ দেখা যায়। এই সময় পায়ে, পিঠে এবং আঙ্গুলে ব্যথা অনুভব হতে পারে। মাথা ব্যথা, কম বা বেশি খিদে, ত্বকে দাগ বা ব্রণ ইত্যাদি হতে পারে। এই ধরণের লক্ষণ পিরিয়ডস শুরু হবার পর নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যায়। তাই জন্য ওই সময় শক্ত হবার চেষ্টা করুন।

ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার বয়স

সাধারণত ঋতুস্রাব মেয়েদের ১১ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে শুরু হয়ে যায়। কিন্তু যদি এর থেকে কম বা বেশি সময়ে শুরু হয় তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই। ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার মানে মেয়েটি মা হতে পারবে। শুরুর দিকে ঋতুস্রাব এবং ডিমস্ফোটনের সময়ের মধ্যে অন্তর হতে পারে। আবার এর উল্টোটাও হতে পারে। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ যে পিরিয়ডস শুরু না হলেও গর্ভবতী হওয়া যায় তাই এই ব্যাপারে বিশেষ সাবধানতা বজায় রাখে।

প্রথমে কিশোরীদের বোঝান

কিশোরীদের শরীরে শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করলে কিংবা ১০-১১ বছর বয়সী কিশোরীদের মাসিক ধর্ম সম্পর্কে জানিয়ে দিন এবং এই অবস্থার সঙ্গে কিভাবে ম্যানেজ করবে সেটাও বুঝিয়ে দিন। যাতে শরীরে হওয়া এই সামান্য প্রক্রিয়া সম্পর্কে আগে থেকে নিজেকে তৈরি রাখতে পারে।

পিরিয়ডস শুরু হলে

পিরিয়ডস শুরু হবার দিনটা মনে রাখার চেষ্টা করুন যাতে আপনি আগে থেকে নিজেকে তৈরি রাখতে পারেন। এই সময় নিজেকে কোন ব্যাপারে আটকাবেন না। সাধারণ ভাবেই জীবনযাপন করুন। শুধু সময় পেলে একটু বিশ্রাম করুন।

chat_icon

Ask a free question

Get FREE multiple opinions from Doctors

posted anonymously

TOP HEALTH TIPS

doctor

View fees, clinc timings and reviews
doctor

Treatment Enquiry

Get treatment cost, find best hospital/clinics and know other details