রক্তচাপ কম করার কিছু উপায়
বর্তমান সমাজে দিনের পর দিন ধরে রক্ত চাপের রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সাময়িক পরিস্থিতিতে যেকোনো বয়সের মানুষেরই রক্তচাপ ঘটিত সমস্যা দেখা দিচ্ছে কারণ শুধুমাত্র তাদের ব্যাস্ততার জীবন,রাস্তার ধারের ফাস্ট ফুড এবং সবথেকে প্রধান কারণ হলো অনিয়মিত জীবনশৈলী। এমনিতে তো রক্তচাপের রোগ খুবই সাধারণ দেখায় কিন্তু সেটার উপর নিয়ন্ত্রণ না পেলে সেই সমস্যা আরো বৃহৎ আকার ধারণ করে যার ফলে হৃদজনিত সমস্যা, স্ট্রোক এবং কিডনির ও সমস্যা দেখা দিতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ বা নিম্ন রক্তচাপ উভয়ই শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। সেই কারণে এখন অনেক চিকিৎসক ই নিয়মিত হারে রক্তচাপ পরীক্ষার কথা বলে থাকেন।
যদি আপনার উচ্চ রক্তচাপ বা নিম্ন রক্তচাপ নিয়ে কোনো সমস্যা থাকে তাহলে আপনার কাছে দুটো উপায় আছে এর প্রতিকারের। দুটি উপায়ের প্রথমটি হলো: আপনি প্রতিদিন কিছু বিদেশী ওষুধ খেতে পারেন যার আবার অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও থাকে এবং দ্বিতীয় উপায়টি হলো: ঘরোয়া টোটকা যার দ্বারা খুব সহজেই আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত হবে,আপনার শরীরে কোনোরূপ পার্শপ্রতিক্রিয়া হবে না এবং তার সাথে শরীরের জন্য অনেক সুবিধাজনক।তো আজ আমরা জানি রক্ত চাপ কমানোর ঘরোয়া টোটকা।
- তুষের মাখা
আটা ও ময়দা সমপরিমানে মিশিয়ে বানানো রুটি খুব চিবিয়ে-চিবিয়ে খান, আটা থেকে তুষ বের করবেন না। এর ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে খুব সাহায্য করে।
-
বাদামি চাল
যতটা পারবেন বাদামি চাল বা ব্রাউন রাইস খাবার চেষ্টা করুন। কারণ এতে আছে লবন, ফ্যাট এবং শর্করা নামমাত্রই থাকে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের জন্য এই চাল খুব উপকারী।
-
রসুন
রসুনের মধ্যে এলিসিন থাকে যা শরীরে নাইট্রিক অক্সিডের উৎপাদন বৃদ্ধি করে যা মাংস পেশিকে আরাম প্রদান করে। এছাড়া রক্তচাপের ডায়ালোস্টিক এবং সিস্টোলিক সিস্টেমেও আরাম প্রদান করেন। সেই জন্য রক্তচাপের সমস্যায় ভোগা রোগীদের প্রতিদিন এক কোয়া রসুন খালি পেটে খাওয়া উচিত।
-
আমলকী
আমরা সকলেই জানি যে আমলকী ব্যবহারে অনেক রোগের উপশমে সাহায্য করে কিন্তু আজ থেকে জানবেন যে আমলকীর ব্যবহার রক্তচাপ রোগেও অনেক আরাম প্রদান করে থাকে। আমলার মধ্যে থাকে ভিটামিন সি। যা রক্ত চলাচল ঠিক করে আর শরীরে শর্করার মাত্রাও ঠিক রাখে।
-
মুলো
এমনিতে তো মুলো একটি অতি সহজে প্রাপ্ত সবজি। যা নিয়ম করে খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। কাঁচা বা রান্না করা অবস্থায় খেলে এর থেকে শরীরে খনিজ এবং প্রচুর মাত্রায় পটাসিয়াম ঢোকে। এটা উচ্চ-সোডিয়াম ওলা খাদ্য খাবার ফলে উচ্চ রক্তচাপও ঠিক রাখতে কাজ করে।
-
তিলের বীজ আর ধানের তুষ
উপরিউক্ত দুটি জিনিস একসাথে খেলে রক্তচাপ নিমন্ত্রনে থাকে। এটি হাইপারটেনশনের রোগীদের জন্যও উপকারী।এটাও বলা হয় যে ব্লাড প্রেসারের অনেক ওষুধের থেকে এই টোটকা টি বেশি কার্যকরী।
-
তিসি বীজ বা মসীনা বীজ
তিসি বীজের মধ্যে প্রচুর মাত্রায় আল্ফ়া লিনোলিক অ্যাসিড থাকে। এটা একপ্রকারের গুরুত্তপুর্ন ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। অনেক পরীক্ষায় যানা গাছে যে যাদের এই উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা আছে, তাদের খাদ্যে তিসিবীজ যোগ করা উচিৎ। এতে শর্করার মাত্রা কম থাকে এবং এটা খেতে রক্ত চাপও কমায়।
-
এলাচ
বৈজ্ঞানিকদের মতে প্রতিদিন এলাচ খাবার ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত হয়। এর ফলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বাড়ে যা রক্ত সঞ্চালনের জন্য খুবই ভালো।
-
পেঁয়াজ
প্রতিদিন পেঁয়াজের ব্যবহার কোলেস্ট্রল নিয়ন্ত্রণে রাখে.এর মধ্যে অক্সিডেন্ট ফ্লাভানল থাকে যা হৃদয়জনিত কেন সমস্যা হতে দেয়না।
-
দারচিনি
দারচিনির ব্যাবহার ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে খুব সহজ করে.এর মধ্যেও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা রক্ত সঞ্চালনকে ভালো করে।
-
খাবারে নুনের ব্যবহার কমান
রক্তচাপ বাড়ানর ক্ষেত্রে নুনের ভুমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খাবারে নুনের ব্যবহার কমালেই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ হাতের মুঠোয় চলে আসবে।
-
রক্ত জমাট বাঁধতে দেয়া যাবেনা
রসুন খুব ভালো কাজ করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে। এটি রক্ত জমাট বাঁধতে দেয়না। উচ্চ রক্তচাপের প্রধান কারণই হলো রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া। রসুনের ব্যবহার করলেই এর হাত থেকে নিস্তার পাওয়া যাবে।
-
আমলকীর রস
একটি বড়ো চামচে আমলকীর রস নিয়ে তার সাথে সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে রোজ সকালে আর বিকেলে পান করুন। রক্তচাপ খুব সহজেই নিয়ন্ত্রিত হবে ।
-
গোলমরিচ
যখন রক্তচাপ বাড়বে তখন হাফ চামচ গোলমরিচের গুঁড়ো জলে ভালো করে মিশিয়ে ২ ঘন্টা অন্তর পান করুন। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের এটি আরেকটি কার্যকরী উপায়।
-
পাতিলেবু
উচ্চ রক্তচাপ দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে হাফ গ্লাস জলে হাফ পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন এবং এই লেবুজল ২ ঘন্টা অন্তর পান করলে অনেক তাড়াতাড়ি ফল পাওয়া যায়।
-
তুলসী পাতা
কিছু তুলসী পাতার সাথে দুটো নীম পাতা একসাথে বেটে নিন,এরপরে সেই মিশ্রণটিকে টো মিনিট জলে ভিজিয়ে রাখুন.তারপর খালি পেতে সকালবেলা সেই জলটি পান করুন। ১৫ দিনের মধ্যেই আপনি র নিশ্চিত সুফল পাবেন।
-
পেঁপে
উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যাই ভোগ রোগীদের জন্য পেঁপে এক অব্যর্থ ওষুধ। খালি পেতে পেঁপের একটা টুকরো চিবিয়ে খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সহজ হয়ে যায়।
-
মিশ্রণ
মৌরি দানা,সাদা জিরে আর চিনি তিনটি জিনিস সমান পরিমানে নিয়ে গুঁড়ো করে নিতে হবে। এক গ্লাস জলে এক চামচ মিশ্রণ গুলে সকালে আর বিকেলে খেলেই উপকার পাওয়া যাবে।
-
আদা
অতিরিক্ত শর্করার ফলে আর্টেরিজের গায়ে ফলক দেখা যায় যা ক্যালসিয়াম স্কুম তৈরী করে। এর ফলে তা রক্ত চলাচলে বাধা দেয় এবং হাইপার টেনশনের সৃষ্টি করে। আদার মধ্যে অনেক কার্যকরী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা শর্করা নিয়ন্ত্রন করে। এছাড়া আদা রক্ত চলাচলেও অনেক সহজ করে।
-
মেথি
প্রতিদিন সকালে এবং বিকেলে নিয়ম করে ৩ গ্রাম মেথি গুঁড়ো জলে মিশিয়ে পান করুন। এর ব্যবহারে আপনি ১৫ দিনের মধ্যেই এর সুফল হাতে পাবেন।
-
হাঁটা
প্রতিদিন সকালে খালি পায়ে সবুজ ঘাসের উপর ১০-১৫ মিনিট হাঁটুন। এটি নিয়মমত করলেই রক্তচাপ খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।