অলিভ অয়েলের লাভ

অলিভ অয়েলকে বাংলায় জলপাইয়ের তেলও বলা হয়। এর গুন আমাদের অনেক সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে। কিন্তু এর ঔষধের গুণের জন্য সারা বিশ্বে এর ব্যবহার বেড়ে গেছে। যেকোনো কারণে আপনি যখনই বাজার থেকে অলিভ অয়েল কিনবেন তখন বিশেষ খেয়াল রাখবেন। কারণ নিম্ন গুণমানের অলিভ অয়েলও বাজারে বিক্রি হয়। সব থেকে ভালো অলিভ অয়েল সেই গুলিকেই ধরা হয়, যেগুলি কোল্ড প্রেস করা হয়। এর মধ্যে সব থেকে ভালো স্বাদ এবং গন্ধ থাকে। অলিভ অয়েলের সবচেয়ে ভালো কথা হল যে, এটি অভ্যন্তরীণ এবং বহিরাগত উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা যায়। তাহলে জানা যাক অলিভ অয়েলের সুবিধা এবং অসুবিধা।

1. ওজন কমানো

   স্বাস্থ্যকর উপাদান যুক্ত অলিভ অয়েল, চর্বি, পেটের মেদ এবং ওজন কমানোর জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যদি আপনি এটা সঠিক মাত্রায় নিয়মিত ব্যবহার করেন তাহলে আপনার সহজেই ওজন কমবে। ওজন কমানোর জন্য আপনাকে প্রতিদিন সকালে দু চামচ করে অলিভ অয়েল গ্রহণ করতে হবে।

2. জ্বলনের জন্য

   অলিভ অয়েলের মধ্যে উপস্থিত উপাদান গুলি সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে। বহুদিন থেকে হওয়া সংক্রমণ কমানোর ক্ষেত্রে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এগুলি ছাড়াও, এটি ক্যানসার, অ্যালঝ হেইমার, হৃদরোগ, মধুমেহ এবং বাতের মত অসুখ সারাতে সক্ষম।

3. চুলের জন্য

   ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ অলিভ অয়েলে ভিটামিন ই রয়েছে। এই সবউপাদান গুলিব শুষ্ক এবং ক্ষতিগ্রস্ত চুলের চিকিৎসায় খুব কার্যকারী বলে প্রমাণিত হয়েছে। এটি দু-মুখ চুলের সমস্যার সমাধানের জন্য খুব উপকারী।

4. কোলেস্টেরল কমায়

   অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে আপনার শরীরে কম ঘনত্ব লিপোপ্রোটিন বা খারাপ কোলেস্টেরল কমে যাবে। অন্যদিকে এটি ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে, যা শরীরের জন্য খুব ভালো। অলিভ অয়েলের সাহায্যে আপনার হার্ট শক্ত হবে।

5. ক্যানসারের চিকিৎসার ক্ষেত্রে

   পলিফিল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমূহ অলিভ অয়েল আপনার শরীরের জ্বলন এবং ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। এর জন্য আপনাকে এক থেকে দু চামচ অলিভ অয়েল প্রতিদিন ব্যবহার করতে হবে।

6. মুখের জন্য

   অলিভ অয়েল ত্বকের আর্দ্রতার জন্য একটি ভাল ময়শ্চারাইজার হিসাবে গণ্য করা হয়। ফ্যাটি অ্যাসিডের সাথে ভিটামিন এ এবং ই সমৃদ্ধ অলিভ অয়েলে ত্বকের দাগ, কুঁচকানো লাইন ইত্যাদি কমিয়ে দেয়।

7. উচ্চ রক্তচাপ কমায়

   জলপাই তেলের সাহায্যে, আপনি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এ ছাড়া, খাবারে অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে আমাদের শরীরের রক্ত সঞ্চালন ভালো ভাবে হয়। এটি রক্তচাপের সমস্যা দূর করে।

8. হাড় শক্ত করার জন্য

   শরীরের হাড়কে শক্ত করার জন্য অলিভ অয়েল দিয়ে মালিশ করুন। অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে অলিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমে যায়। হাড়কে স্বাস্থ্য সুস্থ রাখার জন্য এটি মনে রাখবেন।

9. মস্তিষ্কের জন্য

   প্রতিদিন অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে জ্ঞানীয় ঝুঁকি কমে যায়। এর সাথে এটি অ্যালার্জি সমস্যা যেমন অ্যালঝাইমারস এবং ডিমেনশিয়া দূরীকরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া, এটি বিষণ্নতা দূর করতেও সাহায্য করে।

10. মধুমেহ রোগের চিকিৎসা

    আমরা শুদ্ধ অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারি মধুমেহ রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে। কারণ এটি চিনিকে নিয়ন্ত্রণ করে ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা প্রচার করে। এই অলিভ অয়েল সঠিক ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

অলিভ অয়েলে ক্ষতি

• অলিভ অয়েল ত্বকে ব্ল্যাকহেডসের সমস্যা তৈরি করে।
• শুষ্ক ত্বকের জন্য অলিভ অয়েল উপযুক্ত নয়।
• অনেক মানুষের অলিভ অয়েলে অ্যালার্জির সমস্যা থাকতে পারে।
• বেশি পরিমাণে অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে রক্তচাপের সমস্যা হতে পারে।
• ফ্যাট যুক্ত অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে হজমে সমস্যা হতে পারে। গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল জাতীয় সমস্যা যেমন ডাইরিয়া ইত্যাদি হতে পারে।
• অলিভ অয়েলকে যদি অন্য কোন তেলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করেন তাহলে ত্বকে জ্বালা, দাগ ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।