ম্যালেরিয়ার লক্ষণ
সবচেয়ে প্রচলিত সংক্রামক রোগের মধ্যে অন্যতম হল ম্যালেরিয়া, যা প্লাজমোডিয়াম গোষ্ঠীর প্রোটোজোনের পরজীবী দ্বারা সংক্রামিত হয়। মাত্র চার ধরনের প্লাজমোডিয়াম পরজীবী মানুষকে প্রভাবিত করতে সক্ষম। এই চারটির মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক হল প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম ও প্লাজমোডিয়াম ভিভক্স। এছাড়া প্লাজমোডিয়াম ওভেল এবং প্লাজমোডিয়াম ম্যালেরিয়া নামে পরজীবীও মানুষকে আক্রান্ত করে। এই সব গোষ্ঠীকে বলা হয় 'ম্যালেরিয়া পরজীবী'।
এপ্রসঙ্গে ম্যালেরিয়ার পরজীবীর বাহক হল স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশা। এর কামড়ের ফলে ম্যালেরিয়ার পরজীবী লোহিত রক্তকণিকায় প্রবেশ করে। এ কারণে রক্তাল্পতা, শ্বাস কষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
- সর্দি নিয়ে আসা জ্বর
ম্যালেরিয়া সংক্রমণের সবচেয়ে বিশিষ্ট লক্ষণ হল, হঠাৎ তীব্র ঠাণ্ডা কম্পন এবং তার কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্বর। প্রায় চার-ছয় ঘণ্টা ধরে জ্বর থাকে, তারপর ঘাম নেমে আসে।
-
প্রতি দুই-তিন দিন ধরে জ্বর আসছে
অন্য ধরনের সংক্রমণ যাকে পি ফ্যালসিপেরাম বলে । এতে প্রাথমিকভাবে কম্পনের সাথে জ্বর আসে এবং ৩৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টা অবধি জ্বর থাকে। লক্ষ্য করা গেছে, এই জ্বর প্রতি দু-তিন দিন পর পর ফিরে আসে।
-
তীব্র মাথাব্যথা সমেত জ্বর
ম্যালেরিয়ার কিছু গুরুতর লক্ষণ রয়েছে যার জন্য পি ফ্যালসিপেরাম একমাত্র দায়ী । ৬ থেকে ১৪ দিনের সংক্রমণ পর এটি ঘটে । এর ফলে প্লীহা এবং যকৃতের আকার বৃদ্ধি পায়, তীব্র মাথাব্যথা, রক্তে গ্লুকোজের অভাব ইত্যাদি লক্ষ্য করা যায়।
-
অবচেতন
তরুণ-তরুণী, শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের এই ম্যালেরিয়া হলে অবচেতন হয়ে যেতে পারে এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।অনেক ক্ষেত্রে, কয়েক ঘন্টার মধ্যে মৃত্যু ঘটতে পারে । মহামারী এলাকায় মৃত্যুর হার বেশি হয়।
-
হাতে পায়ে খিঁচুনি
অনেক যুবক বা শিশুর সেরিব্রাল ম্যালেরিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি । এতে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ কমে যায় । আরও বেশি প্রভাব পড়লে হাত-পায়ের মধ্যে একটা অদ্ভুত খিঁচুনি অনুভুত হয়। কিছু শিশুর মানসিক বিকাশ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
আরও কিছু লক্ষণ
- অনেক সময় দেখা যায়, ধীরে ধীরে শরীরের ত্বক ঠান্ডা হতে শুরু করে জ্বরের জন্য।
- ম্যালেরিয়া জ্বরের জন্য অনেক সময় মানুষ বমি করেন। মাঝেমধ্যে মাথা ভারী হয়ে যাচ্ছে বলে মনে হয়।
- এর অন্যতম লক্ষণ হল চোখ লাল হয়ে যাওয়া এবং চোখে সামান্য জ্বালা অনুভব করা।
- আপনি ক্লান্তি বোধ করতে পারেন। অনেক সময় এই ক্লান্তিতেও দুর্বলতা বাড়ে।
- তীব্র মাথাব্যথা অনেক মানুষের মধ্যে দেখা যায়, যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পায় । এগুলো বমি বা ক্লান্তির কারণেও হতে পারে।
- অনেক অল্পবয়সী ছেলেমেয়ে ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দেয়। কারণ শিশুদের ইমিউন সিস্টেম বা অনাক্রম্যতা দুর্বল হলে তারা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এই লক্ষণগুলি লক্ষ্য করলে অবিলম্বে ডাক্তার দেখানো উচিত । উল্লেখ্য, সময়মতো হাসপাতালে গেলে আরাম পাবেন । কিন্তু দেরিতে হাসপাতালে গেলে আপনার অসুখের পাশাপাশি অস্বস্তি আরও বেড়ে যাবে।